ক্রীড়া ডেস্কঃ
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে থেকেও বিদায়ের ঘোষণা মুশফিকুর রহিম। এবার সিদ্ধান্তটাও একইভাবে জানিয়েছেন অভিজ্ঞ কিপার-ব্যাটসম্যান।
তার বিদায়ে দীর্ঘদিনের সতীর্থরা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন নিজেদের অনুভূতি, শুভকামনা জানিয়েছেন সামনের দিনের জন্য।
প্রায় ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্বে সর্বোচ্চ ৮২টি ওয়ানডে খেলেছেন মুশফিক। এর আগে-পরে লম্বাসময় একসঙ্গে মাঠ মাতিয়েছেন দুজন।
সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় মাশরাফি লিখেছেন, ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে মুশফিকের বিদায়বেলায় তার মনে ভেসে উঠছে দীর্ঘ দিন একসঙ্গে খেলার নানান স্মৃতি।
তোমার বিদায়ের ঘোষণায় এক লহমায় অনেক কিছু ভেসে উঠল চোখে। এত বছরের একসঙ্গে পথচলা, মাঠের ভেতরে-বাইরে কতশত স্মৃতি! ওয়ানডেতে তোমার রেকর্ডই তোমার হয়ে স্বাক্ষ্য দেবে অনেক কিছুর। তোমার ব্যাটের দ্যুতিতে কত আলোর দিন এসেছে দেশের ক্রিকেটে!
টেস্ট ক্রিকেটে সামনের দিনগুলোতে মুশফিকের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন ওয়ানডেতে দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক।
রেকর্ড বইয়ে লেখা থাকবে না, কতটা নিবেদন আর নিষ্ঠায় তুমি ক্যারিয়ার গড়েছিলে, কতটা ঘামের স্রোত পেরিয়ে সাফল্যের তীর ছুঁয়েছিলে। তোমার পরিশ্রম, প্রতিজ্ঞা আর ত্যাগের গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আশা করি, সাদা পোশাকের বাকি অধ্যায়টুকু রঙিন করে তুলবে। তোমার ব্যাটে অভিজাত সংস্করণে দেশের ক্রিকেট সমৃদ্ধ হবে আরও…।
মুশফিক ও তামিম ইকবালের বন্ধুত্বের চর্চা দেশের ক্রিকেটে হয়ে আসছে অনেক সময়ই। জাতীয় দলে যাত্রা শুরুর অনেক আগেই বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে একসঙ্গে পথচলা শুরু দুজনের।
মাঠ ও মাঠের বাইরে প্রায় দুই যুগের সম্পর্কে মুশফিকের এক সংস্করণ থেকে বিদায়ে তামিমও আবেগপ্রবণ হয়ে গেছেন। শুধু লিখিত বার্তায় যেন তিনি মনের ভাবটা বোঝাতে পারতেন না। তাই প্রিয় বন্ধুর অবসরের ঘোষণা শুনে পূর্ণাঙ্গ এক ভিডিওবার্তা দিয়েছেন তামিম।
আজকে আসলে এমন একটা দিন… সাধারণত কেউ যদি কোনো সংস্করণ থেকে অবসর নেয়, সবাই স্ট্যাটাস দেয়, নিজের অনুভূতি বোঝায়। কিন্তু এমন একজন ব্যক্তি আজকে অবসর নিল, যার সঙ্গে আমার ২০-২৫ বছরের যাত্রা। একটা স্ট্যাটাসে আমি বোঝতে পারতাম না, তার প্রতি আমার অনুভূতিটা কী বা আমার এখন কেমন অনুভূত হচ্ছে।
দীর্ঘ পধচলায় ক্রিকেটার হিসেবে এগিয়ে চলার পথে মুশফিককে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তামিম। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মুশফিকের পরিশ্রম ও নিবেদনের বাহবা দেন তিনি।
মুশফিককে এতটুকুই বলতে চাই, ‘দোস্ত তোর সঙ্গে আমার খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায় থেকে। আমি তোকে ধাপে ধাপে বেড়ে উঠতে দেখেছি। একজন সাধারণ ব্যাটসম্যান থেকে কীভাবে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস, সেটা আমি দেখেছি।
অনেক মানুষের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রম দেখার সুযোগ হয়নি। আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি, আমি দেখেছি একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব, আমার মনে হয় সে সবই করেছে। এখনও করে যায়। আমরা অনেক সময় এটা নিয়ে হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এত কষ্ট করে কেন! তবে তার নিবেদন, খেলার প্রতি ভালোবাসা অসীম। এটা আমি কথায় কাউকে কোনোদিন বোঝাতে পারব না।