
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিন দিন ধরে চলা আলোচনার পর আজ শনিবার দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষর করেছে। এর মাধ্যমে প্রাণঘাতি এই সংঘাতের অবসান ঘটেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। চলতি মাসে নতুন করে দু’দেশের মধ্যে আন্তসীমান্ত সংঘাত শুরু হয়। এতে জুলাইয়ে হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়। উভয় দেশের ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং সীমান্ত এলাকার ৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে যুদ্ধবিরতি আজ দুপুর ১২টা (স্থানীয় সময়) থেকে কার্যকর হবে। এই সময় থেকে সাধারণ নাগরিক, নাগরিক অবকাঠামো এবং প্রতিপক্ষের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলাসহ সব ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ থাকবে।
যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষর করেছেন থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাথাফোন নারকফানিট এবং কম্বোডিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী টি সেইহা। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি ঘণ্টা ৭২ পার হলে থাইল্যান্ড আটক ১৮ কম্বোডিয়ান সৈন্যকে মুক্তি দেবে। উভয় দেশ উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে এমন উস্কানিমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকবে এবং মিথ্যা তথ্য প্রচার এড়াতে সম্মত হয়েছে।
চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে যে আসিয়ানের পর্যবেক্ষক দল চুক্তির বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে। উভয় দেশ স্থলভাগে সম্ভাব্য যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য খোলা যোগাযোগ বজায় রাখবে। তারা মাইন অপসারণ ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সহযোগিতা করবে।
দুই দেশের সীমান্তবর্তী বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে চলমান লড়াই থামিয়ে আজ থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত আলোচনা শুরু হয়। তিন দিনের আলোচনা শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়া বিবদমান দুই দেশকে নতুন যুদ্ধবিরতি শুরু করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এই তিন দেশ গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের প্রাণঘাতী সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করেছিল, কিন্তু সেই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সংঘাতের মূল কারণ ঔপনিবেশিক যুগে তৈরি ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত, যেখানে থাকা প্রাচীন মন্দিরগুলো উভয় দেশই নিজেদের দাবি করে। জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে বহু মানুষ নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি হয়, কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই তা ভেঙে যায়। চলতি মাসে নতুন লড়াই শুরু হলে উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করে এবং সাধারণ মানুষকে নিশানা করে হামলার অভিযোগ করেছে।