1. news@dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ : দৈনিক আলোকিত নিউজ
  2. info@www.dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ :
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মানসিক স্বাস্থ্য কি কম গুরুত্বপূর্ণ? রংপুরে ভেজাল গুড় উৎপাদন, ২ লাখ টাকা জরিমানা, কারখানা বন্ধ কেরানীগঞ্জে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উদযাপন, আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান পূর্বধলায় মামলার বাদীকে আটকানোর জন্য আসামী পক্ষের কোটে মামলা নাটোরে দাদীকে টর্চ লাইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা, স্বামীসহ নাতনী আটক তালায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন শিবচরে নবগঠিত পৌর বিএনপি কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নওগাঁয় একদিনে শিশুসহ ৩জনের মরদেহ উদ্ধার সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে সম্ভব: ইসি মাছউদ চট্টগ্রামের এখন টেলিভিশনের সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসি হামলার প্রতিবাদে নওগাঁ মানববন্ধন

মানসিক স্বাস্থ্য কি কম গুরুত্বপূর্ণ?

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ০ বার পড়া হয়েছে

ড. আব্দুল ওয়াদুদ:

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য আলাদা কিছু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক কার্যকারিতা পরস্পর নির্ভরশীল। ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব, সহিংসতা এবং জনস্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থা সামগ্রিকভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। এ জন্য অন্য অসুস্থতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। প্রচলিত মানসিক অসুস্থতার মধ্যে এডিএইচডি (শৈশবের নিউরোডেভেলপমেন্টাল ব্যাধিগুলোর মধ্যে একটি) দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, অটিজম, মাদক ব্যবহার, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, কনডাক্ট ডিজঅর্ডার, হতাশা, বিষণ্নতা, খাওয়ার ব্যাধি বা ইটিং ডিজঅর্ডার, বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা, আচরণ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা, সিজোফ্রেনিয়াসহ মানসিক ব্যাধিগুলো জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এর বাইরেও নানা রকমের মানসিক রোগের অস্তিত্ব আছে। শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও পুরুষ—যেকোনো বয়সের মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস প্রথম ১০ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেন্টাল হেলথ দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল। এটি একটি বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থা যা ১৫০ টিরও বেশি দেশে উপস্থিত রয়েছে। উদ্যোগটি ১৯৯২ সালে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশ্ব ফেডারেশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল রিচার্ড হান্টার প্রস্তাব করেছিলেন।

১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট থিম ছাড়াই দিবসটি পালিত হতো; এটি মূলত মানসিক স্বাস্থ্যের সাধারণ সমস্যা সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। পরবর্তীতে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশ্ব ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব ইউজিন ব্রডির পরামর্শের ভিত্তিতে, দিবসটি ১৯৯৪ সালের থিমের উপর ভিত্তি করে পালিত হয়েছিল এবং ১৯৯৪ সালের থিম ছিল “বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নত করা”। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশ্ব ফেডারেশন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, এর প্রতিরোধ এবং মানসিকভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আরও ভাল সুযোগ, সহায়তা তৈরি করতে প্রচার ও শিক্ষিত করার জন্য প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট থিম ঘোষণা করে। ২০২৫ সালের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস (World Mental Health Day) এর থিম হলো:
Access to Services- Mental Health in Catastrophes

এটি মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্রবেশ ও সুযোগ (access to services) বিষয়কে মূলে রেখে বিশেষভাবে জরুরি অধঃস্তর অগত্যা বিপর্যয়, সঙ্কট, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তার গুরুত্বকে তুলে ধরবে।

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণগুলি বহুমুখী, প্রায়ই জেনেটিক, জৈবিক, পরিবেশগত এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলির সংমিশ্রণ জড়িত।
জেনেটিক এবং বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্টর অর্থাৎ কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার একটি জিনগত উপাদান থাকে, যা ব্যক্তিদের আরও সংবেদনশীল করে তোলে যদি তাদের নির্দিষ্ট কিছু রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে। উপরন্তু, মস্তিষ্কের রসায়নে ভারসাম্যহীনতা বা কাঠামোগত অস্বাভাবিকতা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে।
পরিবেশগত এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণ অর্থাৎ
জীবনের অভিজ্ঞতা, যেমন ট্রমা বা অপব্যবহারের ইতিহাস, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার অন্যতম একটি প্রধান কারণ। কাজের চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং প্রিয়জনের হারানো পরিবেশগত কারণগুলির উদাহরণ যা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিকে ট্রিগার বা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

সম্প্রতি ইউনিসেফের একটি জরিপে উঠে এসেছে ৫-১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে মানসিক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগার প্রবণতা বেশি এবং এই বয়সী শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও ৮ শতাংশ ও ক্রমাগত বাড়ছে যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখন যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় রাষ্ট্রীয়ভাবে শারীরিক নির্যাতন বন্ধকরণে আইন বলবৎ আছে, কিন্তু মানসিক নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেই। শিশুবিষয়ক গবেষক জানেট কেই তার গবেষণা গ্রন্থ ‘প্রোটেক্টিং চিলড্রেন’-এ লিখেছেন শিশুদের মানসিক নিগ্রহের বিষয়টি তখনই গ্রহণযোগ্যতা পায় বা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয় যখন ভিক্টিমের শরীরে শারীরিক আঘাতের চিহ্ন থাকে। অথচ শিশুদের মৌখিক কিংবা নীরব বুলিং তাদের অন্তরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে শিশুদের সার্বিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। জানেটের মতে, শিশুদের মানসিক অপব্যবহারের বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত না হলে অভিভাবক পর্যায়ে বিষয়টি গুরুত্ব পাবে না। যেহেতু শিশুদের শারীরিক বিকাশের মতোই মানসিক বিকাশও গুরুত্বপূর্ণ তাই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার বিকল্প নেই। বয়সের বিভিন্ন স্তরে শিশুমস্তিষ্কের বিকাশের সঠিক অবকাঠামোর জন্য দরকার একটা শিশুবান্ধব পরিবেশ। এক্ষেত্রে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে। ম্যারি এমিং ইয়াং তার জনপ্রিয় বই—‘ফ্রম আরলি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট টু হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’-এ খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে তিন-আট বছর বয়সী শিশুদের মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতার বিকাশ তার পরবর্তী জীবনের ব্যক্তিত্ব বিকাশ, কোনো বিষয়ের সম্যক জ্ঞান লাভ, আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও লজিক্যাল আর্গুমেন্ট করার সক্ষমতা সর্বোপরি শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। তাই শিশুদের এ স্টেজটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আর এ চ্যালেঞ্জিং সময়টুকু সঠিকভাবে মোকাবেলার জন্য পরিবার, প্রাকপ্রতিষ্ঠান এবং প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিকাশে শব্দ চয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। উদাহরণস্বরূপ দুটি শিশুর মধ্যে যখন একটিকে নির্দিষ্ট করে প্রশংসা করা হবে তখন অন্য শিশুটির মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বিরূপ প্রভাব পড়বে। তেমনিভাবে স্কুলে একজন বাচ্চা ভালো করছে বা আরেকজন বাচ্চা পিছিয়ে পড়ছে বলে তুলনা করে সামনাসামনি নেতিবাচক কিছু বললে সেটি তার মনোকষ্টের কারণ হতে পারে। অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া বাচ্চাটি ভালো না করতে পারায় অনুশোচনায় ভুগতে পারে এবং তা ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।

সাধারণ মানুষ মানসিক রোগ বা সমস্যাকে ইতিবাচকভাবে দেখতে শুরু করেছে, এটি আশার কথা। কিন্তু শারীরিক রোগকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে তা হয় না। শারীরিক অবস্থার সামান্য অবনতি হলেই আমরা নিঃসংকোচে চিকিৎসকের কাছে যাই। তাহলে মন, যেটি শরীরের চেয়ে বেশি জটিল, এর পরিচর্যা বা চিকিৎসার জন্য কতজন যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে যান? সবার কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম নিলে এই সমস্যা অনেকটাই কমবে।

মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি তৈরি হয় মায়ের গর্ভাবস্থা থেকে। এরপর পরিবারে গুড প্যারেন্টিং, প্রাগ–স্কুল ও স্কুল পর্বে মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা, উন্নত চাইল্ড কেয়ার সেন্টার, কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও সুরক্ষা থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া ও চিকিৎসা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে কমপক্ষে প্রতি চারজনের একজন যেকোনো সময় গুরুতর মানসিক সমস্যায় পড়তে পারে, যাদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রয়োজন।

এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনটি এল মনে রাখতে হবে। ১. লুক অর্থাৎ দৃষ্টি দেওয়া: তাদের নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি দেওয়া, জরুরি প্রয়োজনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া এবং তাদের মধ্যে যাদের ভেতর তীব্র কষ্ট-যন্ত্রণা ও মানসিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, তাদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া। ২. লিসেন বা শোনা: মনোযোগ দিয়ে তাদের চাহিদা ও উদ্বেগগুলো শোনা; তাদের স্বস্তি দিতে ও শান্ত রাখতে তাদের কথা শুনুন। ৩. লিংক বা সংযোগ স্থাপন: মৌলিক চাহিদা পূরণ ও অন্যান্য সেবা পাওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে হবে, সমস্যার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তা করতে হবে, প্রয়োজনীয় সব তথ্য সরবরাহ করতে হবে, সামাজিক সহায়তা দিচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে দিতে হবে। কারা ফার্স্ট এইড দেবেন: পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, অফিস সহকর্মী, শিক্ষক, পুলিশ এবং রোগীর সামাজিক নেটওয়ার্কের মধ্যে যাঁরা রয়েছেন, তাদের যে কেউ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেন। এদের সামান্য ট্রেনিং দিয়ে দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়ানো যেতে পারে। তাঁরা মূলত রোগের লক্ষণগুলো চিহ্নিত করবেন এবং সঠিক চিকিৎসা নিতে রোগীকে নির্দেশনা দেবেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপে দেখা যায়, মানসিক রোগীদের খুব কমসংখ্যক প্রকৃত আধুনিক চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে দীর্ঘ সময় অপচিকিৎসা করার পর বিজ্ঞানভিত্তিক মেডিকেল চিকিৎসা নিতে আসেন। মানসিক রোগের চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, জটিলতা তত বাড়বে এবং চিকিৎসার ফলাফলও কম পাওয়া যাবে। তাই মানসিক রোগীকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে, সব লোকলজ্জা অগ্রাহ্য করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ঘরে শারীরিক সমস্যার জন্য ফার্স্ট এইড–সহায়তা গ্রহণ করি। তেমনি সবাইকে প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড সম্বন্ধে জানতে হবে ও তা ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে।

মানসিক রোগের বাইরে গিয়ে শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের সমৃদ্ধির কথা যদি ধরি তবে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে মুক্ত চিন্তার পথকে রুদ্ধ করা, মানুষের প্রাকৃতিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করা। কিন্তু আবার এ কথাও মনে রাখতে হবে, চিন্তার মুক্তি, চিন্তার স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, আমি যা ইচ্ছা তা-ই প্রকাশ করব। মুক্ত চিন্তাকে, চিন্তার স্বাধীনতাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সে যেন অন্যের চিন্তাকে আহত না করে; অন্য গোষ্ঠীর ও অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, চিন্তা, সংস্কৃতিকে আঘাত না করে। অর্থাৎ এ মুক্ত চিন্তার বিকাশের ক্ষেত্রে ব্যক্তি পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহমর্মিতা হচ্ছে প্রধান শর্ত। মানসিক স্বাস্থ্যকে সুন্দর রাখতে হলে আমাদের মৌলিক অধিকার অর্থাৎ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোর প্রাপ্যতা এবং যথাযথ প্রয়োগের নিশ্চয়তা বিধান জরুরি।

বর্তমান বিশ্বে প্রতি আটজনে একজন কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। একই সঙ্গে মানসিক সমস্যা শিশু-কিশোরসহ যুবক জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা, হতাশা ইত্যাদি। ফলে সুন্দর সুস্থ এবং উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের দিকে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। বিশ্বায়নের চাপ মোকাবিলায় তাদেরকে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। পারিবারিক, সামাজিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের মুক্ত-স্বাধীন চিন্তা তাদের নির্ভয়ে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে হবে এবং এটা প্রতিটি শিশু-কিশোরের মৌলিক এবং মানবিক অধিকার। শিশুর মানসিক বিকাশ, মানসিক স্বাস্থ্যের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হলে কিছুতেই আপনি উন্নত মনের, সুস্থ মনের পরিণত মানুষ, উন্নত জাতি আশা করতে পারেন না। ফলে উন্নত মননশীল বিশ্ব, সমৃদ্ধশালী মানবিক জাতি তৈরি করতে গেলে মানসিক স্বাস্থ্যকে একটি সর্বজনীন মানবাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং এর বাস্তবায়নের জন্য কাজ করার কোনো বিকল্প নাই। পারস্পারিক সহমর্মিতাপূর্ণ মানসিকতাই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের অন্যতম অনুঘটক।

লেখক : ফিকামলি তত্ত্বের জনক, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
ওয়াইল্ডলাইফ বিশেষজ্ঞ।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ,কলাম,তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট