
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। ‘নো কিংস’ নামে আয়োজিত এই গণআন্দোলনে নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত লাখো মানুষ অংশ নিয়েছেন।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নীতি, নির্বাহী ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং ‘একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রবণতা’র অভিযোগে দেশজুড়ে এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, মায়ামি ও নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার আর পতাকা নিয়ে তারা শ্লোগান তোলেন— ‘ডেমোক্রেসি, নট মনার্কি’ (গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র নয়) এবং ‘নো কিংস ইন আমেরিকা’ (আমেরিকায় কোনো রাজা নয়)।
রয়টার্স জানিয়েছে, নিউইয়র্ক সিটিতে অন্তত এক লাখ মানুষ শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন। পুলিশও নিশ্চিত করেছে, কোনো সহিংসতা বা ভাঙচুর ছাড়াই বিক্ষোভ শেষ হয়। লস অ্যাঞ্জেলেস ও সান ফ্রান্সিসকোতেও সমানতালে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্দোলনের আয়োজকরা বলেছেন, ‘নো কিংস’ নামটি প্রতীকী— এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার আহ্বান। আয়োজক কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য নয়, বরং দেশের মৌলিক নীতিগুলোর সুরক্ষার জন্য রাস্তায় নেমেছি।’
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠরা অভিযোগ তুলেছেন, এই আন্দোলনে বামপন্থি সংগঠন ও ট্রাম্পবিরোধী আন্তর্জাতিক লবি যুক্ত। তাদের দাবি, এটি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র। ট্রাম্প নিজে এ বিষয়ে এক ভাষণে বলেছেন, ‘আমি জনগণের প্রেসিডেন্ট, রাজা নই। যারা এসব দাবি করছে, তারা বিভ্রান্ত।’
অন্যদিকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নাগরিকদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা ট্রাম্পের ‘অসংবিধানিক পদক্ষেপ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
লেখক বেথ জাসলফ বলেন, ‘যেভাবে ফেডারেল প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভ ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, তার ঘোষিত অভিবাসন নীতি ও বিচার বিভাগ সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তা আরও তীব্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #NoKings এবং #DefendDemocracy হ্যাশট্যাগে লাখো পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এটি একদিনের বিক্ষোভ নয়— ‘গণতন্ত্র রক্ষার দীর্ঘযাত্রার শুরু’।