আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
গাজার অবরুদ্ধ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে জলবায়ু আন্দোলনের আন্তর্জাতিক মুখ, গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে “নির্মম ও অপমানজনক” আচরণের দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মীরা।
শনিবার (৪ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করে।
গাজামুখী ত্রাণ ফ্লোটিলা ‘সুমুদ’-এ অংশ নেওয়া তুর্কি সাংবাদিক এরসিন সেলিক জানান, ‘আমি নিজ চোখে দেখেছি, গ্রেটা থুনবার্গকে মাটিতে টেনে নেওয়া হয়েছে। তাকে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করা হয়।’
এ ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনো বলেন, ‘মাত্র ২২ বছর বয়সী একজন সাহসী নারীকে অপমান করে ইসরায়েলি পতাকায় জড়িয়ে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়েছে।’
এছাড়া ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া মালয়েশিয়ান কর্মী হাজওয়ানি হেলমি এবং আমেরিকান অ্যাকটিভিস্ট উইন্ডফিল্ড বিভার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে এক অভিজ্ঞতা ভাগ করে জানান, গ্রেটাকে ধাক্কা দিয়ে বাহিনীর প্যারেডে হাঁটানো হয় এবং পর্যাপ্ত পানি বা ওষুধও দেওয়া হয়নি।
বিভার বলেন, ‘তার (গ্রেটা) সঙ্গে ভয়ঙ্কর আচরণ করা হয়েছে। এরপর সেই ছবি ও ভিডিও প্রচারে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা হিসেবে।’
তুর্কি উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার বলেন, ‘তারা আমাদের কুকুরের মতো ব্যবহার করেছে। তিন দিন ধরে ক্ষুধার্ত রাখা হয়, পানি দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা টয়লেট থেকে পানি খেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ অভিজ্ঞতা আমাকে গাজার মানুষের দুর্দশা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে।’
আটকের পর ১৩৭ জন আন্তর্জাতিক কর্মীকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিক। বাকিদের ইউরোপে পাঠানো হবে বলে তেল আবিব জানিয়েছে।
এর আগে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ৪০টি নৌকা ও ৪৫০ জন আন্তর্জাতিক কর্মীকে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ছড়িয়ে পড়ে।