ফায়েজুল শরীফ,ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মাদারীপুরে রাজৈর মডেল থানায় মাদকসহ তিন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ও নির্যাতনের প্রমাণ মেলায় ভুক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের স্মরণাপন্ন হলে বিজ্ঞ আদালত রাজৈর থানার পুলিশ ইনস্পেক্টর (ওসি তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষসহ আরো দু’জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পুলিশ সুপার, মাদারীপুর-কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মাদারীপুর এর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রিভিশন দাখিল করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা। যার শুনানির দিন আগামী মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
এ দিকে উক্ত ঘটনায় তদন্তপূর্বক দোষীদের বিচার দাবি করেছে ভুক্তভোগীর পরিবারবর্গ। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ এলিয়াম হোসেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈর পৌরসভার স্বরমঙ্গল এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযানে যায় রাজৈর থানা পুলিশ। এর নেতৃত্ব দেন রাজৈর থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ। এ সময় থানার এ,এস,আই তরিকুল ইসলাম, এ,এস,আই এইচ এম কামরুজ্জামান, এ,এস,আই জাহিদুল ইসলাম সহ সঙ্গীয় সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা ইলিয়াস খালাসি, দুবাই প্রবাসী সুজন মোল্লা ও ‘ছ-মিলের’ শ্রমিক সুমন খাঁ- কে আটক করে ৫০ পিচ ইয়াবা উদ্ধারের দাবি করে। এ ঘটনায় পরদিন এ,এস,আই- এ,এইচ,এম কামরুজ্জামান বাদী হয়ে রাজৈর থানায় আটকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করেন। পরে আদালতে হাজির করা হলে তাদের বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পথিমধ্যে আসামিপক্ষের অভিভাবকরা জানতে পারেন যে আসামীদের থানা হেফাজতে থাকাবস্থায় অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা উক্ত নির্যাতনের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চেয়ে আদালাতে মামলাট আবেদন করেন । তারা জানান, গ্রেফতার করার পরে থানার মধ্যে ইলিয়াস খালাসির বাম হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর বাম পায়ের উরুতে বুটের লাথি মারা হয়েছে। যা আদালতে উত্থাপিত হলে বিজ্ঞ বিচারক এ সময় আসামির শরীরের দৃশ্যমান জখম দেখতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে জেলার সিভিল সার্জনকে আসামির চিকিৎসা ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন। সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ শরিফুল আবেদীন কমল সংশ্লিষ্ট আসামির শরীরে নির্যাতনের সত্যতা পেয়ে মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে পাঠান এবং এরই প্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ এলিয়াম হোসেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন। মামলা রুজু হবার পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রিভিশন দাখিল করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা। যা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।