জসিম উদ্দিন,টাংগাইল প্রতিনিধিঃ
টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলার থানার সেকেন্ড অফিসারের কক্ষে বসে রাতের খাবার খাচ্ছে ১৫ বছরের কিশোর। ঘড়ির কাটায় রাত সাড়ে ১২টা। চোখে স্পষ্ট ঘুমের ছাপ থাকলেও মুখে চিন্তার ছাপ নেই। কক্ষের বাইরে ডেকে নিয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জানালেন পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় এই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ঘাটাইল থানায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি ঘটে সংগ্রামপুর ইউনিয়নের একটি
গ্রামে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এক শিশুকে ভুল বুঝিয়ে বাড়ির পাশের একটি হলুদ বাগানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে গ্রেপ্তার কিশোর। শিশুটির ডাক-চিৎকারে ময়মনা বেগম নামে এক নারী এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত কিশোর দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি পারিবারিকভাবে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। সমাধান না হলে শনিবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা হলে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার কিশোরের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। দুই বছর আগে ছেলের সুন্নতে খাৎনা করা হয়েছে। এই ছেলে কীভাবে এ কাজ করতে পারে?’
তার ভাষ্য, ওই পরিবারের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা। বাদীপক্ষের বাড়ির পাশ দিয়ে তাদের চলাচলের রাস্তা। মাঝে মাঝে রাস্তায় বেড়া দিয়ে রাখে। জমির সীমানা নিয়েও বিরোধ রয়েছে। ২০০১ সালে তার ভাই দেলোয়ার হোসেনকে ছেলের মতো ধর্ষণ মামলার আসামি করে মামলা দেয় ওই পরিবার। তার ছেলেও শত্রুতার শিকার।
স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব আলী জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরেই ধর্ষণচেষ্টা মামলা করা হয়েছে বলে তাদের বিশ্বাস। কারণ দুই পরিবারের মধ্যে আগের থেকেই শত্রুতা চলে আসছে। তাছাড়া আসামির বয়স ১২ বছরের বেশি হবে না, জন্ম নিবন্ধনের সময় বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আসামির দাবি, ঘটনার দিন ওই শিশুর সঙ্গে তার দেখাই হয়নি।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ধর্ষণচেষ্টা মামলায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। আর শিশুটিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।