স্টাফ রিপোর্টার পাবনাঃ
প্রায় দেড় যুগ ১৬ বছর পর পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার রেলস্টেশনের পাশের রেলওয়ের প্রায় (১.৫২)দেড় একর জলাভূমি দখলমুক্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসির সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে জলাভূমিটি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ মির্জা(সিরাজগঞ্জ-৪) ও তার মির্জা পরিবারের দখলে ছিল।
জানা যায়,দিলপাশার রেল স্টেশনের সংলগ্ন আরএস দাগ নং-১১০৬-এর ১.৫২ একর রেলওয়ের জলাভূমি ২০০৮ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য লতিফ মির্জার মৃত্যুর পর ভাতিজা মির্জা কে. ই. তুহিন এর নামে লিজ নবায়ন করা হয়। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২০ অনুযায়ী রেলের সম্পত্তি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে লিজ দেওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ নীতিমালা অমান্য করে জলাভূমিটি দীর্ঘদিন একই পরিবারের দখলে ছিল।
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সারা দেশে রেলওয়ের সম্পত্তি সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পুরনো লিজ বাতিল করে নীতিমালা অনুসারে জলাভূমিটি পাশের জমির মালিক আলহাজ্ব সরদার মোঃ আলী আকবর কে চলতি বছরের জন্য লিজ প্রদান করে পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি দপ্তর।
তবে এ নিয়ে নতুন করে ১৩ আগস্ট সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার ভাতিজা মির্জা কে.ই তুহিন পাকশী রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি অফিসে উপস্থিত হয়ে পুনরায় নিজের নামে জলাভূমির বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন। এ সময় তার অনুসারীদের উপস্থিতিতে অফিস প্রাঙ্গণে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই ব্যক্তিকে বছরের পর বছর টেন্ডার ছাড়া বরাদ্দ দেওয়ার কোন রকম সুযোগ নেই। অতীতে যে রেলওয়ের ভূমি জলাশয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই হয়েছিল। বর্তমানে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়া কোনো ধরনের লিজ প্রদান করা হবে না।
এরই মধ্যে গত ১৮ আগস্ট-২০২৫ জলাভূমি এলাকায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও লিজপ্রাপ্ত আলহাজ্ব সরদার মোঃ আলী আকবর আনুষ্ঠানিকভাবে রেল ভূমিজলাসয় (আরএস দাগ নং-১১০৬) দখল গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আমি যেহেতু রেল জলাভূমির পাশের জমির মালিক, তাই নিয়ম মেনে লিজ পেয়েছি। এখন থেকে এলাকার মানুষ কে সঙ্গে নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছ চাষ করা হবে।
স্থানীয় মোঃ বেলাল হোসেন বলেন দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মির্জা গং রেল জলাভূমিটি দীর্ঘ দিন ভোগ দখল করলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা মুক্ত হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ বিষয়ে পাকসী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন নিয়ম মেনেই দিলপাশার রেলস্টেশন পাশের রেল ভূমির জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে,আইনের বাইরে কোনকিছু করা হয়নি।