বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ সোমবার।
ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এদিন এসব মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন।
দুদকের কৌঁসুলি মুহাম্মদ সুলতান মাহমুদ জানান, “তিন মামলাই সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য রয়েছে। একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, আরেকটিতে জয়সহ ১৭ জন এবং অপরটিতে পুতুলসহ ১৮ জন আসামি রয়েছেন। তারা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরার সুযোগ থাকছে না।
গত ৩১ জুলাই পূর্বাচল প্রকল্পের ৬ প্লট দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, তাদের সন্তানসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয় ১১ আগস্ট।
আরও তিন মামলায় শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ১৩ আগস্ট।
শেখ পরিবারের বাইরে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নুরুল ইসলাম, নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেশের বাইরে।
দুদক জানায়, পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু হয়। ১২ জানুয়ারি প্রথম মামলা হয় পুতুলের বিরুদ্ধে। পরদিন শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপর ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক।
সব মিলিয়ে ছয় মামলায় আসামির সংখ্যা ২৩। অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযোগ্য হয়েও পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।