আলোকিত নিউজ ডেস্কঃ
রোববার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকায় শুরু হয় তীব্র যানজট। একযোগে কয়েকটি বড় রাজনৈতিক সমাবেশ, এইচএসসি ও বিসিএস পরীক্ষা এবং সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস এই চতুর্মুখী চাপের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শহরের স্বাভাবিক চলাচল। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে কর্মজীবী, অফিসগামী যাত্রী ও পরীক্ষার্থীরা।
সকালের দিকে কল্যাণপুর, শ্যামলী, সায়েন্সল্যাব, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট, শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার ও কাঁটাবন এলাকায় গাড়িগুলো চলে কচ্ছপ গতিতে। বিশেষ করে শাহবাগ মোড় কার্যত অচল হয়ে গেলে এর প্রভাব পড়ে আশপাশের অলিগলিতেও।
সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। বাসে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। অনেকেই বাসে উঠতে না পেরে রাস্তার পাশে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আসাদগেটে দাঁড়িয়ে থাকা একজন চাকরিজীবী বলেন, বাসে তো ওঠার জায়গা নেই। আর যেটা চলছে, সেটাও খুব ধীরে। অফিসে কখন পৌঁছাবো, বলা মুশকিল। কর্মদিবসে এমন বড় সমাবেশ না হলে ভালো হতো।
মালিবাগগামী এক যাত্রী জানান, বারডেমে আমার আত্মীয় ভর্তি। গাড়িতে উঠেছি অনেক কষ্টে, কিন্তু গাড়ি একদম চলছে না।
সড়কে তীব্র চাপের প্রভাব পড়ে মেট্রোরেল ব্যবস্থাতেও। ফার্মগেট, পল্লবী, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ফার্মগেট স্টেশনে টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী আসিফ আলী বলেন, রাস্তায় জ্যাম দেখে মেট্রো ধরলাম। কিন্তু এখানে এসেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
আরেক যাত্রী জানান, আজ মেট্রোরেলের দুটি ট্রেন মিস করেছি। এত যাত্রী কখনো দেখিনি।
যানচলাচলে ডাইভারশন নির্দেশনা
ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়: উত্তরমুখী যানবাহন হেয়ার রোড বা মিন্টু রোড ব্যবহার করবে। কাঁটাবন মোড়: পশ্চিম দিক থেকে আসা গাড়িগুলো নীলক্ষেত বা পলাশী হয়ে যাবে। মৎস্যভবন: যানবাহন হেয়ার রোড বা মনসুর আলী সরণি হয়ে ঘুরে চলবে। টিএসসি ও রাজু ভাস্কর্য এলাকা: শাহবাগ এড়িয়ে নীলক্ষেত বা দোয়েল চত্বর হয়ে চলাচলের পরামর্শ। শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান: সংলগ্ন রাস্তাগুলো এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।
আজ ঢাকায় একযোগে এইচএসসি ও বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে। যানজটের কারণে পরীক্ষার্থীদের যেন কোনোভাবে দেরি না হয়, সেজন্য যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে রওনা হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। অভিভাবকদেরও এই বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর সড়ক ও গণপরিবহনে দেখা যায় এক রকম স্থবিরতা। যেখানে যান চলছে, সেখানে গতি ছিল অত্যন্ত ধীর। ব্যস্ত নগর জীবনে এ ধরনের যানজট শুধু মানুষের কর্মঘণ্টাই নষ্ট করছে না, বাড়াচ্ছে মানসিক চাপও।