1. news@dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ : দৈনিক আলোকিত নিউজ
  2. info@www.dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ :
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঈদ উল আযহা শেষ করে নেতা কর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের সাথে কৌশলী বিনিময় করেন আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম ঈদের ছুটি কাটিয়ে শ্রীলঙ্কা মিশনের প্রস্তুতিতে টাইগাররা সিলেট জুড়ে তীব্র গরম, বৃষ্টির আভাস মালয়েশিয়ায় ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের ৫ অঞ্চল, গরম আরও বাড়তে পারে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ উৎসব উদযাপন পঞ্চগড় জেলা বিএনপির নবীনগরে ৯৯ ব্যাচের সাথে ২০০৩ ব্যাচের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত ভারতে আসছেন মেসিরা সৌদির ওয়ার্ক ও ওমরাহ ভিসা সাময়িকভাবে স্থগিত কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে কড়া অবস্থানে বিজিবি

শ্যামল পৃথিবীর কোমল ছায়া আমাদের নিরাপদ আশ্রয়-ড. আব্দুল ওয়াদুদ

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

 

ড. আব্দুল ওয়াদুদ:

মুক্তবাজার অর্থনীতি আমাদের চাহিদাকে করেছে লাগামহীন। ভোগবাদের পাগলা ঘোড়া রুদ্ধশ্বাসে ছুটছে তো ছুটছেই। বাজার অর্থনীতির সূত্রগুলো বলে, যতই উৎপাদন বাড়বে, বেচাকেনা বাড়বে, ততই জিডিপি বাড়বে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষী উৎপাদনের চক্রের মধ্যে পড়ে পৃথিবীর মাটি, পানি, জলাশয়, বনভূমি বিপর্যস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক চিন্তার ধরন পাল্টেছে।

জাতিসংঘের একটি বিজ্ঞানী প্যানেল হুঁশিয়ার করেছে – মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন দ্রুত হারে সাগর-পৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে এবং বরফ গলছে। সেই সাথে, জীব-জন্তুর বিভিন্ন প্রজাতি তাদের আবাসস্থল বদলাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফের আচ্ছাদন বিলীন হওয়ার কারণে কার্বন নি:সরনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে, পরিস্থিতি দিনকে দিন বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। আইপিসি বা জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেলের সর্ব-সাম্প্রতিক একটি বিশেষ রিপোর্টে এসব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেছেন, এই শতকের শেষভাগে গিয়ে যদি বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ শতাংশ বেড়ে যায়, তার পরিণতি কী হতে পারে। সর্বশেষ এই রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, তাপমাত্রার বাড়ার কারণে সমুদ্র এবং বরফে আচ্ছাদিত অঞ্চলের ওপর তার প্রভাব কী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা এবার যা পেয়েছেন, তা আগের রিপোর্টগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ভীতিকর। খুব সংক্ষেপে বলতে গেলে – সাগর-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ছে, বরফ গলছে দ্রুতহারে, এবং এর প্রভাব পড়ছে পুরো বিশ্বের প্রাণীজগতের ওপর।

“ব্লু-প্ল্যানেট (পৃথিবী) এখন মহা-সঙ্কটে। বিভিন্ন দিক থেকে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, এবং এর জন্য আমারাই দায়ী।
বিজ্ঞানীদের এখন কোনো সন্দেহ নেই যে সাগর-মহাসাগরে উষ্ণতা ১৯৭০ সাল থেকে অব্যাহত-ভাবে বাড়ছে ।

মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশে যে বাড়তি তাপ তৈরি হচ্ছে, তার ৯০ শতাংশই শুষে নিচ্ছে সাগর। ১৯৯৩ সাল থেকে শুষে নেওয়ার এই মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। সেই সাথে গলছে গ্রিনল্যান্ড এবং অ্যান্টার্কটিকার বরফ। বাড়ছে সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে হারে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলেছে তার আগের ১০ বছরের তুলনায় তিনগুণ। অ্যান্ডিজ, মধ্য ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ায় যেসব হিমবাহ রয়েছে, সেগুলোর বরফ ২১০০ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশ গলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বরফ গলা পানি গিয়ে পড়ছে সাগরে। ফলে, আগামী দশকগুলোতে সাগর-পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েই চলবে।আইপিসিসির নতুন এই রিপোর্টে বলা হয়েছে ২১০০ সাল নাগাদ সাগর-পৃষ্ঠের উচ্চতা ১.১ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। আগের ধারণার চেয়ে এই উচ্চতা ১০ সেমি বেশি। নিচু জায়গাগুলোতে সাগরের উচ্চতা বাড়ার পরিণতি হবে ব্যাপক। ৭০ কোটি মানুষ এরকম নিচু উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করে। ফলে বিষয়টি খুবই উদ্বেগের।

কার্বন নির্গমন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা যদি বেশি হয়, তাহলে নিউ ইয়র্ক বা সাংহাইয়ের মত বিত্তশালী নগরগুলোও সাগর-পৃষ্টের উচ্চতা বাড়ার কারণে ঝুঁকিতে পড়বে। রিপোর্টে সাবধান করা হয়েছে – সাগরে তাপ বাড়ার ফলে আবহাওয়া দিনকে দিন বিপজ্জনক আচরণ করবে। সামুদ্রিক ঝড় বেশি হবে, জলোচ্ছ্বাস বাড়বে। বিধ্বংসী জলোচ্ছ্বাসের নজির ইতিহাসে খুবই কম। শত বছরে গড়ে একটি করে এরকম দুর্যোগ হয়। কিন্তু নতুন এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের বেশ কিছু জায়গায় খুব বড় মাসের জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। নজিরবিহীন কিছু বিপদের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

প্রতিবছর পৃথিবী থেকে ১৮ মিলিয়ন একর বনভূমি উধাও হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন পৃথিবীর ১২ কোটি গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। মহাসাগরগুলোতে প্রতিবছর ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমছে। সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়া মাইক্রোপ্লাস্টিক মাছের মাধ্যমে মানব শরীরে ঢুকে পড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত পেস্টিসাইডে পৃথিবীর প্রায় ৪০ ভাগ জমির উর্বরতা কমছে, মাটির নিচের অণুজীবগুলো মারা যাচ্ছে। আমেরিকা–ইউরোপের তিন ভাগের এক ভাগ মৌমাছি স্রেফ হারিয়ে গেছে। চীনের শত শত কৃষক প্লাস্টিকের ডিব্বায় পরাগরেণু ভরে হাতে হাতে পরাগায়ন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এভাবে কতদিন টিকবে ধরণী?

আমরা যদি একটা পৃথিবী কল্পনা করি যা বৃক্ষহীন, জলাভূমিহীন এবং বৃষ্টিশূন্য, প্রথমেই যা মাথায় আসবে তা হলো ধূসর, জীবনবিহীন একটি গ্রহ, যেখানে প্রাণের কোন অস্তিত্ব নেই। আদিম মানুষ প্রকৃতির সাথে সমন্বয় রেখে বসবাস করতো। কিন্তু সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষ নিজের হাতে এই সমন্বয় নষ্ট করে নতুন সব প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটিয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে পৃথিবীর বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ এখন ৪১৫ পিপিএম যা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দিন দিন এই পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

যদি বাংলাদেশের কথাই ধরি, কিছুদিন পূর্বেই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা পার করে এসেছে দেশ,যার প্রভাবে পশু-পাখি সহ মানব জীবন হয়ে উঠেছে দূর্বিষহ। শ্রমজীবি মানুষের কষ্ট চোখে দেখার মত ছিলনা। শুধু যে গরম তাই নয়, গত কয়েক বছরে প্রকৃতি অস্বাভাবিক আচরণ করছে। শীত কালে শীত নেই, বর্ষাকাল নেই বৃষ্টি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে তীব্র বায়ুদূষন। বাংলাদেশের নাম এখন প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উল্লেখিত হয়, সেটি বায়ুদূষণে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে থাকার জন্য। বিশ্বব্যাংকের এক জরিপে দৃশ্যমান হয়েছে দেশে মৃত্যুর প্রায় ৩২% নাকি দূষণ প্রক্রিয়ার পরিণতি। আজকের পরিবেশের এই অস্বাভাবিকতার জন্য মানুষের কৃতকর্মই দায়ী বলা চলে। নির্বিচারে আমরা সৃষ্টিকর্তার প্রদত্ত এক অমূল্য উপহার- প্রকৃতির বিনাশ করছি, এতে বিভিন্ন প্রাণীকূলসহ মানব সভ্যতা প্রকৃতির রোষানলে পড়ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য এখন আর ঠিক নেই। বাংলাদেশের ষড়ঋতু যেন হারিয়ে গিয়েছে বছরজুড়ে তীব্র তাপদাহের ডামাডোলে।

বাংলাদেশ উদ্বেগজনক মাত্রার দূষণ এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে যা তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করছে দরিদ্র, পাঁচ বছরের কম শিশু, বয়স্ক এবং নারীদের, যা বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রেন্টমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ) নামের এ রিপোর্ট অনুযায়ী বায়ু দূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সীসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ । এবং পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬% সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ু দূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫% অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২% এর সমপরিমাণ।
বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবেলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পৃথিবীর নানা দেশে দেখা যায় পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হয় না। শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করা যাবে না।
উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ দূষণ শিশুদের ওপর মারাত্বক প্রভাব ফেলছে। সীসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ু দূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুনগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সীসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে।

উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা করতে গিয়ে
আমরা আসলে কতখানি পিছিয়ে যাচ্ছি তা বোঝা যায়, যখন দেখি বর্তমানে দেশে জনপ্রতি বনভূমির পরিমাণ প্রায় ০.০২ হেক্টর মাত্র। আমরা যদি অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশে প্রকৃতিকে না রেখে উন্নয়নের মিছিলে অংশগ্রহণ করি তবে সেই উন্নয়ন মানব সভ্যতার জন্য কতটা যৌক্তিক হবে সেটা বিবেচনার বিষয়। প্রায়শই দেখি রাস্তায় গাছ কেটে, জলাশয় ভরাট করে, খেলার মাঠ দখল করে উন্নয়নের কাজ চলছে। যেখানে তৈরী করা হচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত বহুতলভবন, আবাসিক হোটেল, সোসাইটি এবং সুপারমার্কেট। উন্নয়নের যে পরিকল্পনায় প্রকৃতির কল্যাণ বিবেচনা করা হয়না, সে পরিকল্পনার কোন ভবিষ্যৎ নেই। বড় বড় বিশ্ব নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন। নানা ধরনের সমীক্ষা, গবেষণা প্রতিবেদন, সেমিনার, আলোচনা এবং বক্তৃতা সম্মেলনে আটকে থাকাই কি পরিবেশ রক্ষার একমাত্র উপায় নাকি সরকার এবং মন্ত্রনালয় গুলোর পাশাপাশি জনসাধারণের সচেতনতা এবং নানামুখী পদক্ষেপ বাড়ানোও জরুরি? বিশ্বের যেসব দেশ জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের জনসাধারণ এই বিষয়ে কি ভাবছে। আদৌ তাদের ভাবনায় পরিবেশ এবং প্রকৃতি আছে কি না! অথবা তারা কি জানে তাদের জীবনধারায় কি ধরনের পরিবর্তন আনলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমবে?

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি লাইন এখানে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক – ‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর, লও যত লৌহ লোষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর’

সেই অরণ্যকে আমরা কি আর ফিরিয়ে আনতে পারবো তার সেই চিরচেনা রূপে? মানবসভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে প্রকৃতির যথোপযুক্ত সংরক্ষণের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন করবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবে।’ এই বিষয়টি কি শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব, নাকি আমাদেরও এ বিষয়ে করণীয় আছে?
এই গুরুত্বপূর্ণ দশকে জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবর্তন মোকাবিলায় অনেক দ্রুত ও সময়পোযোগী কর্মপরিকল্পনা নেয়া এখনি সময়। অধিক হারে বৃক্ষরোপণ, শিল্পায়নের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রাণ-প্রকৃতির সঠিক সংরক্ষণ, পরিবেশ দূষণ রোধে সচেতনতা বাড়ানো,নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, শহরে সবুজ বনায়ন প্রকল্প, নদী এবং জলাভূমি দখলমুক্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে। উন্নয়ন দৌড়ে পরিবেশকে বাধাগ্রস্থ না করে পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং পরিবেশ রক্ষায় সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষকে আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। প্রকৃতির উপরেই মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকে রয়েছে, আমরা যেন নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংস ডেকে না আনি। উন্নয়ন হোক, তবে তা যেন হয় পরিবেশ বান্ধব। শ্যামল পৃথিবীর কোমল ছায়া আমাদের নিরাপদ আশ্রয়।

লেখক : ফিকামলি তত্ত্বের জনক,
শিক্ষাবিদ, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক,
ওয়াইল্ডলাইফ বিশেষজ্ঞ

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ,কলাম,তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট