আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েল গাজায় দুইটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবারের জন্য অপেক্ষমাণ অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। হামলায় আরও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। বার্তা সংস্থা আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (০১ জুন) সকালে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে ত্রাণ বিতরণের সময় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের উপর ইসরায়েলি ট্যাংক গুলি চালায়, যেখানে অন্তত ৩১ জন নিহত হয় বলে গাজার সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস জানিয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পর, গাজা শহরের নেৎজারিম করিডোরের দক্ষিণে একটি অনুরূপ বিতরণ কেন্দ্রে গুলিতে আরও একজন নিহত হয় বলে টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
এই ত্রাণ বিতরণ করছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ), একটি বিতর্কিত সংস্থা যেটি ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত এবং যারা গাজায় তাদের ত্রাণ কার্যক্রমের প্রথম সপ্তাহেই বিশৃঙ্খলায় পড়েছে।
জিএইচএফ এর নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক মার্কিন সেনা জেক উডস বিতরণ শুরুর আগেই পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, “এই পরিকল্পনাটি মানবতা, নিরপেক্ষতা, পক্ষপাতহীনতা এবং স্বাধীনতার মানবিক নীতিগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থা জিএইচএফ এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা এই সংস্থাকে নিরপেক্ষতা বিবর্জিত বলে অভিযুক্ত করেছে এবং বলেছে যে, এটি গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইসরায়েলের ঘোষিত সামরিক লক্ষ্য পূরণের একটি মাধ্যম।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, “ত্রাণ বিতরণ এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।”
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের বাহিনী বিতরণ কেন্দ্র বা তার আশপাশে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি।
“সাম্প্রতিক ঘন্টাগুলোতে কিছু মিথ্যা প্রতিবেদন ছড়ানো হয়েছে, যার মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র এলাকায় গাজান বাসিন্দাদের উপর গুলি চালানোর গুরুতর অভিযোগ রয়েছে,” বলা হয় বিবৃতিতে।
জিএইচএফ এর আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা যখন ফিলিস্তিনিরা খাবার নিতে জড়ো হচ্ছিল তখন “সতর্কতামূলক গুলি” ছুড়েছিল। সংস্থাটি বহু মানুষের নিহত হওয়ার প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে এবং তা “মিথ্যা প্রতিবেদন” বলে অভিহিত করেছে।