
লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতলী ঘাট এলাকায় রত্নাই নদীর ওপর নিজ অর্থায়নে এবং নিজেরাই শ্রম দিয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে যুবদলের নেতাকর্মীরা । এতে সাঁকোর পুর্ব পাশের আমতলা গ্রাম এবং পশ্চিম পাশে মহিষতলী গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সোমবার বিকেলে সাঁকোটি উদ্বোধন করে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান আনিছ। এসময জেলা যুবদলের সদস্য সচিব হাসান আলী, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইদ্রিস আলী, সদস্য সচিব হাসানুল হক , যুগ্ম আহবায়ক আবু বকর সিদ্দিক, ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুল করিম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রিপন, দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তুজার রহমান মামুন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই রত্নাই নদীর পশ্চিম পাশে জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতলী এলাকা এবং পূর্ব পাশে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের আমতলী এলাকার মানুষের বসবাস। নদীর পূর্বপাশে তিনটি প্রাথমিক, একটি দাখিল মাদ্রাসা ও দুইটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫শতাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ নৌকা দিয়ে নদী পাড় হতেন। দেশ স্বাধীনের পর থেকে নদীটি দুই ইউনিয়নের মানুষকে বিভক্ত করে রেখেছিলো। উৎপাদিত ফসল নিয়ে নদী পাড় হওয়া ছিলো কৃষকদের বিড়ম্বনা। তাদের নৌকাই ছিলো একমাত্র ভরসা। জনসাধারণের ভোগান্তির বিষয়টি অনুধাবন করে নিজেরাই শ্রম ও অর্থ দিয়ে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেন যুবদলের নেতাকর্মীরা।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান আনিছ ও সদস্য সচিব হাসান আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন ও দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবদলের নেতাকর্মীরা নিজেরাই অর্থ ও শ্রম দিয়ে ওই দৃষ্টিনন্দন বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্কুল শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান,সাঁকোটির বেশি সুবিধা পাবে দুই পাশের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫শতাধিক শিক্ষার্থী। আগে এসব শিক্ষার্থীদেরকে নৌকায় নদী পার হতে হতো। ফলে বাড়তি খরচ, সময় নষ্ট এবং নিরাপত্তাহীনতা ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। বর্ষায় নদীর পানি বেড়ে গেলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যেতো।
৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী মহি উদ্দিন জানায়, এখন সাঁকোটি নির্মাণ হওয়ায় তাদের প্রতিদিনের পথচলা অনেক সহজ হলো। তাদের প্রতিদিন ক্লাসে যেতে আর ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পাড় হতে হবে না। পড়ে গিয়ে বই খাতাও আর ভিজে যাবে না। তারা এখন সহজেই স্কুলে যেতে পারবে
ভ্যান চালক বিপ্লব মিয়া জানান, সাঁকোটি স্থানীয় কৃষক, শ্রমজীবী এবং সাধারণ মানুষের জীবনে এনে দিয়েছে স্বস্তি। হাটবাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা শহরে যাতায়াতের পথ কয়েক কিলোমিটার কমে যাওয়ায় সময় ও যাতায়াত ব্যয় দুটিই কমবে। সাঁকোটি তাদের দীর্ঘদিনের যোগাযোগে দুর্ভোগ লাঘব করেছে।