
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ
ঢাকার কেরানীগঞ্জে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায়, অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে ৫৫তম মহান বিজয় দিবস। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরের প্রথম প্রহরে তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
সকালে জিনজিরার মনু ব্যাপারীর ঢালে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সকাল ৯টায় উপজেলা পরিষদ মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত, রঙিন বেলুন উড়িয়ে বিজয় দিবস ও বিজয় মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অনুষ্ঠিত হয় কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনী। কুচকাওয়াজে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উমর ফারুক বলেন, “উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এমন একটি রাষ্ট্র গঠনে আমাদের কাজ করতে হবে, যেখানে প্রতিটি মানুষের উন্নত জীবনযাপনের নিশ্চয়তা থাকবে। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনোও থেমে নেই—তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ঢাকা জেলা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. সাহাবুদ্দিনসহ কেরানীগঞ্জ এর বিভিন্ন ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধোরা,
২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিবর্গ এবং জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা। বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে স্বাধীনতার চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল (দক্ষিণ) আফতাব আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজস্ব সার্কেল (মডেল) জান্নাতুল মাওয়া, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল আলম, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলমসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ স্থানীয় সুধীজন।
অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তি এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়।