
ফায়েজুল শরীফ,মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের চাপাতলীর গ্রামের আনোয়ার মাতুব্বর ১জন সফল উদ্যোক্তা ও খামারী। ১৬ বিঘা জায়গার উপর অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি গড়ে তুলেছেন দেশীয় মাছের ঘের সহ ফলজ, বনজ, ওষধি ও বৃক্ষরাজির সমাহার। দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসছেন তার এই খামার পরিদর্শনের জন্য। চাপাচলী গ্রামে তার বসতবাড়ীর পাশেই তিনি এই সৌন্দর্য্যমন্ডিত খামারটি দুই বছরের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খামারটিতে এখন শোভা পাচ্ছে সারি-সারি ফলজ, বনজ, ওষধি গাছ সহ নানান বৃক্ষরাজি। সবুজে ছেয়ে গেছে তার খামারটি। রবিবার (৭, ডিসেম্বর) দুপুরে তার ঐ খামার ও মাছের ঘের পরিদর্শনকালে একান্ত সাক্ষাতকারে আনোয়ার মাতুব্বর বলেন- রাজশাহী, বরিশাল, ঝালোকাঠি, নরসিংদী সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে উচ্চ ফলনশীল শতাধিক ফল গাছের চারা এনে তিনি বিগত দুই বছর যাবৎ বিভিন্ন সময়ে রোপণ করেছেন। বর্তমানে তার বাগানটিতে রয়েছে ১২ শতের উপরে গাছ। এজন্য তিনি অনেক অর্থ ব্যায়ের পাশাপাশি শ্রম দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই খামারটি আশেপাশের মানুষজন সহ দূর-দূরান্তের বহু মানুষেরও নজর কেড়েছে। এছাড়াও খামারটিতে চারিদিক ঘুরিয়ে রয়েছে দেশীয় মাছের ঘের। ফল ও ওষধি গাছের মধ্যে রয়েছে আপেল, নাশপতি, মাল্টা, কমলা, আঙ্গুর, ডালিম, চায়না লিচু, সবরি কলা, আমলকি, জলপাই, হরতকি, কাঠাল, ভিয়েতনামী কাঠাল, আতা,আম, জাম, নিম, অর্জুন, লেবু, পেয়ারা, বাতাবী লেবু, কমলা, মাল্টা, দারুচিনি, তেজপাতা,লং গাছ ছাড়াও আরো হরেক রকমের মানুষ ও পরিবেশের জন্য উপকারী গাছ। বৃক্ষরাজির মধ্যে রয়েছে মেহগনি, শিশু, আকাশী, সেগুন, শীল কড়াই সহ অন্যান্য গাছ। ফল, ওষধিগাছ ও বৃক্ষরাজি ফলাতে কৃতকার্য হলেও আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এগুলো করতে যেয়ে তিনি নানা বিড়ম্বনা ও প্রতিহিংসার শিকারও হয়েছেন। কিছুদিন পূর্বে তার বাগানের প্রায় ২০০ উপরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা কেটে ফেলেছে দূর্বত্তরা এবং এজন্য তিনি মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন। পুলিশ তাদের এখনো গ্রেফতার বা সনাক্ত করতে পারেনি। এজন্য তিনি অত্যন্ত মর্মাহত ও হতাশ। তার প্রশ্ন, গাছ তো মানুষের উপকার করে, অক্সিজেন দেয়, ফল দেয়- তাহলে গাছের সাথে শত্রুতা কেনো ? তিনি আরো বলেন, আমি তো এগুলো শুধু একাই আমার পরিবার নিয়ে ভোগ করবো কিংবা খাবো না, পাড়া-প্রতিবেশীদেরও দিয়ে খাবো এবং এখান থেকে তাদের কিছু না কিছু দিচ্ছিও। এছাড়াও এগুলোতো দেশের অর্থনীতি ও বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখবে। তাহলে এগুলোর ক্ষতি করে লাভ কি, এখানে তো অনেক মানুষ কাজ করেও অর্থ উপার্জন করছে। তিনি তার খামারটি এগিয়ে নিতে কারো প্রতিহিংসা নয় সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মাছের ঘেরে রুই, কাতলা, চিতল, আইর, কালিবাউস, পাবধা, শিং, কই সহ হরেক রকমের দেশী মাছ চাষ করা হয়েছে। খামারটির আশপাশের এলাকাবাসি তার এই প্রকল্পকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।