বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন শনিবার সপ্তম দিনে পড়েছে। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানরত শিক্ষকরা শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। একই সঙ্গে আজ (১৮ অক্টোবর) দুপুরে কালো পতাকা মিছিলেরও আয়োজন করা হয়েছে।
‘জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট’–এর নেতৃত্বে চলমান এই আন্দোলনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী সকালে এক ফেসবুক পোস্টে সবাইকে কালো পতাকা নিয়ে মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, ‘দুপুর ১২টায় কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রের অবহেলার প্রতিবাদ জানানো হবে। সবাই চলে আসুন।’
আন্দোলনের সূচনা ও বিস্তার
গত ৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। শিক্ষক সমাজ এই সিদ্ধান্তকে ‘অসম্মানজনক’ বলে প্রত্যাখ্যান করে এবং তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
মূল দাবিগুলো হলো: জাতীয় বেতনস্কেলে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার সমতা, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ।
১২ অক্টোবর প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সময় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তোলে। এর পর থেকেই শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
অনশন ও কর্মবিরতি
১৭ অক্টোবর বিকেল ২টা থেকে শিক্ষকরা আনুষ্ঠানিকভাবে আমরণ অনশন শুরু করেন। তাদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এর পাশাপাশি সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলছে, যা গত ১৩ অক্টোবর থেকে ঘোষণা করা হয়।
আন্দোলনের ধারাবাহিক কর্মসূচি
১৫ অক্টোবর: আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আড়াই ঘণ্টা ধরে।
১৭ অক্টোবর: পূর্বঘোষিত ‘যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা’ কর্মসূচি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর স্থগিত করা হয়।
১৮ অক্টোবর: কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে সরকারের নীতির প্রতিবাদ জানানো হবে।
সরকারি প্রতিক্রিয়া এখনো অনুপস্থিত
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো আশ্বাস বা পদক্ষেপের ঘোষণা আসেনি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরনের দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।