ফায়েজুল শরীফ.ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মাদারীপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে শনিবার, ১১ ই অক্টোবর সকালে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন, মাদারীপুর জেলা শাখার আলোচনা সভা। সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলা উক্ত অনুষ্ঠানে মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব সহ বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ মোখলেছুর রহমান। এতে প্রধান অতিথির আসন গ্রহন করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন, ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক এ্যাডভোকেট মোঃ আজমল হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও মাদারীপুর সদর-২ আসনের আসন্ন নির্বাচনে দলের ঘোষিত প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাদারীপুর সদরের মস্তাফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আবুল বাশার, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা মোঃ এনায়েত হোসেন, নায়েবে আমীর আব্দুর রহিম সহ মাদারীপুর সদর উপজেলা সহ অন্যান্য আরো ৪ টি উপজেলা থেকে আগত আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ সহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, একটি সুন্দর জাতি ও সুন্দর দেশ গঠনে আদর্শ শিক্ষকের কোনো বিকল্প নাই, শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদন্ড তেমনি শিক্ষকরাও জাতির অন্যতম একটি মেরুদন্ড, পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই শিক্ষকদের মর্যাদা ও তাদের বেতন-ভাতা সবচেয়ে বেশী। পক্ষান্তরে এর উল্টা চিত্র আমাদের বাংলাদেশে, শিক্ষকের মর্যাদার কথা বলতেও কষ্ট লাগে, তাদের বেতন-ভাতা পৃথিবীর সকল দেশের চাইতে কম। তারা আরো বলেন, বিগত পতিত আওয়ামী সরকারের ১৫ বছরের দুঃশাষণামলে কোনো সেক্টরেই মানুষের কোনো স্বাধীনতা, সম্মান, বাক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার, মান- মর্যাদা ছিলো না, বিরোধীদল নিধন করা, গুম,খুন করা, মিথ্যা হামলা-মামলা দিয়ে হয়রাণি করা, হত্যা করাই ছিলো মনে হয় তাদের প্রধান উন্নয়ন প্রকল্প । আর সৎ, আদর্শবান, সুশিক্ষিত, দেশপ্রেমিক, মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের মর্যাদা দেয়া তাদের কাছে ছিলো নগণ্য, তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক, বেতন-ভাতা ছিলো পৃথিবীর মধ্যে সবার নীচে। এমনকি তারা শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ অবস্থান, সভা-সেমিনার, অনশন ও মানবন্ধনেের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতেও তারা হামলে পড়তো। আমরা আশা করেছিলাম ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে সরকার শিক্ষকদের সেই দূর্দশার কথা বিবেচনা করে তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক ও অধিকার ফিরিয়ে দিবেন কিন্তু তারও তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জনগনের ভোটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামীর নির্বাচনে বিজয় অর্জন করে সরকার গঠন করতে পারলে শিক্ষকদের সবার উপরে মর্যাদা দেয়া হবে, তাদের ন্যায্য বেতন-ভাতা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানের শেষে বক্তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন এবং এ ব্যাপারে একটি গণভোট আয়োজনের দাবী জানান বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে।
নির্বাচনের ব্যাপারে আদায়ের সংগ্রামে, রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গেলে সাবেক পতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সরকারের কতিপয় পেটুয়া বাহিনী, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, লগি-বৈঠা লীগের মতো সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত, মারধর, হামলা-মামলা সহ নানানভাবে নাজেহাল করেছে। শেষ পর্যন্ত ঐ জালিম সরকারের পরিণতি হয়েছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে জান বাঁচানোর মধ্য দিয়ে। এখন বিদেশে বসে এদেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা সকল প্রকার নিষ্ফল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে, গুম-খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের পরেও তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নাই।