আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া শান্তি প্রস্তাবে এবার কার্যকর সাড়া মিলছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রস্তাবের বেশিরভাগ শর্তে সম্মতি জানানোর পর এবার যুদ্ধবিরতির পথে এগোচ্ছে ইসরায়েলও। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে ইসরায়েল পুরোপুরি প্রস্তুত।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘আর্মি রেডিও’ এক খবরে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে ‘গাজা দখল করার জন্য চালানো অভিযান থামানোর’ নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।
এ বিষয়ে আর্মি রেডিওর সংবাদকর্মী ডরোন কাদোস বলেন, ইসরায়েলের ‘রাজনৈতিক মহল’ গাজায় চলা সামরিক কার্যক্রম ‘সর্বনিম্ন’ পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এবং শুধু ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ নিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে বলেন, “হামাস যদি সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে গাজায় বোমাবর্ষণ ও অভিযান এখনই থামাতে হবে। এটি স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি করবে।”
এরপরই হামাস একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার আওতায় তাদের কব্জায় থাকা সব জিম্মিকে—জীবিত এবং মৃত—মুক্তি দিতে প্রস্তুত। পাশাপাশি গাজার প্রশাসনিক কর্তৃত্ব জাতীয় ঐকমত্যভিত্তিক একটি টেকনোক্র্যাট সরকারের কাছে হস্তান্তরেরও ইঙ্গিত দেয় সংগঠনটি।
হামাসের এ ইতিবাচক অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত সাড়া দেয় ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার সঙ্গে আমাদের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপ বাস্তবায়নে ইসরায়েল প্রস্তুত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয় পক্ষের এমন সাড়া অবশেষে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের অবসানে বাস্তবসম্মত সুযোগ তৈরি করেছে। যদিও চূড়ান্ত চুক্তি ও তার বাস্তবায়ন নির্ভর করবে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কার্যকর ভূমিকার ওপর।
এদিকে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, হামাসকে সময়সীমার মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি প্রস্তাবে সম্মতি জানাতে হবে, অন্যথায় “অভূতপূর্ব পরিণতির মুখোমুখি” হতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনায় বলা হয়, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মির মুক্তি, মৃতদের দেহাবশেষ হস্তান্তর এবং ইসরায়েলে আটক শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলও।