
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মোড় নিয়েছে ফিলিস্তিন প্রশ্ন। পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবশালী তিন দেশ-যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া-ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রশ্ন হলো, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের জন্য আসলে কী অর্থ বহন করে?
ফিলিস্তিন এতদিন অনেক দেশের কাছে ‘পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে সীমাবদ্ধ ছিল। এবার পশ্চিমা শক্তিধর তিন দেশের স্বীকৃতি তাদের রাষ্ট্রীয় পরিচিতিকে আরও বৈধতা দিল। এর ফলে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক আদালতসহ বিশ্ব ফোরামে ফিলিস্তিনের বক্তব্য আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
ইসরায়েলকে সবসময় পশ্চিমা জোটের নিরঙ্কুশ সমর্থন ভরসা জুগিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো ঘনিষ্ঠ মিত্র যখন অবস্থান বদলেছে, তখন ইসরায়েল স্পষ্টতই কূটনৈতিক চাপে পড়বে। এতে একদিকে তেল আভিভের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা বাড়বে, অন্যদিকে ফিলিস্তিনের জন্য সমর্থনের ক্ষেত্র প্রশস্ত হবে।
গাজায় দীর্ঘদিনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ নিয়ে যে আন্তর্জাতিক সমালোচনা চলছে, তা এবার আরও জোরালো হলো। মুসলিম দেশগুলোর পাশাপাশি পশ্চিমা প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো যখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল, তখন এটি বিশ্বজনমতকে স্পষ্টতই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নিয়ে আসবে।
রাষ্ট্র হিসেবে বৈধতা পেলে ফিলিস্তিন সরাসরি উন্নয়ন সহযোগিতা পাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে আন্তর্জাতিক অনুদান ও বিনিয়োগের পথ খুলবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি ফিলিস্তিনের স্বনির্ভরতা ও রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
তবে শুধু স্বীকৃতি দিয়েই সংকট কাটবে না। পশ্চিম তীরে দখলীকৃত বসতি, গাজায় অবরোধ ও ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন-এসব না থামালে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেবে না। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও এখানে গুরুত্বপূর্ণ; তারা যদি দৃঢ় বিরোধিতা চালিয়ে যায়, তবে এ স্বীকৃতির প্রভাব আংশিক সীমিতই থেকে যাবে।