বজলুর রহমান শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের শিবচরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা মামলার দুই আসামিকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার খালেক সরদারের ছেলে রানা সরদার (৩২) এবং কেরানিবাট এলাকার হারুন সরদারের ছেলে সিয়াম সরদার (২২)।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাব-৮ এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে শিবচর পৌরসভার প্রধান সড়কের সোনালী ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবর (২৫) নামে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত রাকিব মাদবর উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাকিবকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনা পুরো এলাকায় ব্যাপক
পরে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর থেকেই আসামিদের ধরতে র্যাব-৮ ও র্যাব-১০ যৌথভাবে অভিযান শুরু করে।
র্যাব জানায়, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গতিবিধি শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তি সহায়তায় প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, মামলার প্রধান আসামিদের মধ্যে দু’জন ঢাকা কেরানীগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জ এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে।
পরবর্তীতে শুক্রবার গভীর রাতে র্যাব-৮ ও র্যাব-১০ এর যৌথ দল দুই জেলায় সমন্বিত অভিযান চালায়।
কেরানীগঞ্জ থেকে রানা সরদার এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে সিয়াম সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন,আমরা প্রযুক্তি সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করি। পরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রাকিব হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শিবচর উপজেলা এবং আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব। একই সঙ্গে মামলার অন্যান্য আসামিদের ধরতে র্যাব ও পুলিশ সমন্বিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
র্যাব-৮ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, উদ্দেশ্য এবং কারা এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল এসব তথ্য উদঘাটনের জন্য আটক আসামি জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
এদিকে, নিহত রাকিবের পরিবার ও এলাকাবাসী দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।তারা বলছে,আমরা চাই রাকিব হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকজনকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।