নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ কথা জানান।
বৃহস্পতিবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ বৈঠকের পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে ইশরাকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিইসির কক্ষে বৈঠকের পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় অপেক্ষমান সাংবাদিকদের একজনের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা আপিল বিভাগের কোনো রায় এখন (হাতে) পাইনি। রায় (কপি) পাওয়ার পরে কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসে, আইনগত বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের যা করণীয়, আমরা করবো।
গণমাধ্যমের শিরোনাম দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ১ জুন বর্তমান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে।
২৭ এপ্রিল ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের পর শপথের বিষয়টি নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার, আইন মন্ত্রণালয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়াল।
সবশেষ ইশরাকের শপথ আটকাতে আপিল বিভাগে যে আবেদন করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার তা পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এই জটিলতায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেয়। কিন্তু তাতে ধোঁয়াশা কাটেনি, ইশরাক ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে বসার সুযোগ পাবেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি।
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট জারির জন্য নির্বাচন কমিশন মন্ত্রণালয়ের কাছে যে মতামত চেয়েছিল, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
আপিল বিভাগ বলেছে, সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা দিয়েছে। সেই ক্ষমতা প্রয়োগ না করে নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। অথচ সংবিধান অনুযায়ী উল্টো নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করার কথা মন্ত্রণালয়ের।
শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী ইয়াসিন খান বলেন, ইশরাকের বিষয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। লিখিত রায় প্রকাশিত হলে আদালতের পর্যবেক্ষণ জানা যাবে।
তবে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন যে গেজেট জারি করেছিল, আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করেনি বলেও মন্তব্য করেন এ আইনজীবী।