আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) টানা বিমান হামলায় আবারও রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে গাজা উপত্যকা। গত রবিবার সন্ধ্যা থেকে আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮১ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ৫৩ জনই ছিলেন গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির বাসিন্দা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৯ জন। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তবে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে আইডিএফ। সেই সময় হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
টানা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জনে, আর আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৯৬৬ জন। এসব হতাহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির দুই মাসও পার হয়নি, এর আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও হামলা শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে গত আড়াই মাসে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৩ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন প্রায় ১১ হাজার।
হামাসের হাতে বন্দি থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ জানিয়েছে, সামরিক অভিযান চালিয়েই তাদের উদ্ধার করা হবে।
গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য বহুবার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। ইতোমধ্যে হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।