
বুরো চীফ,সিলেটঃ
রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা আট আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি দাবি করেছে এই হামলার পরিকল্পনার সাথে আওয়ামী লীগের পলাতক দুই প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবিদ্ধ হন শরীফ ওসমান হাদি। এই ঘটনায় ফয়সাল করিম মাসুদ নামের এক ব্যক্তিকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে ডিবি। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী ফয়সালের সঙ্গে একাধিক পেশাদার শুটার ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের গভীর যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার আদালতপাড়া ও মিরপুরে যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারদের সঙ্গেও ফয়সালের যোগাযোগ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিতে ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘটনা শেষে আলামত নষ্ট করতে নম্বর প্লেটটি খুলে একটি ম্যানহোলে ফেলে দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বর্ণলতা আবাসিক এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই মোটরসাইকেল ও একটি হেলমেট উদ্ধার করে সিটিটিসির একটি দল। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নম্বর প্লেট পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো হামলায় ব্যবহৃত হোন্ডা হরনেট মোটরসাইকেলটি অন্তত আটবার হাতবদল হয়েছে। সর্বশেষ শুভ নামের এক ব্যক্তি এটি কিনলেও ফয়সালের সহযোগী কবিরের এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে মাইনুদ্দিন ইসলামের নামে এটি কেনা হয়েছিল।
এদিকে র্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে বুধবার কেরানীগঞ্জ থেকে ফয়সালের বাবা মাকে আটক করা হয়েছে। তারা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করেছেন যে ফয়সালের সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতা নানকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
বর্তমানে ফয়সাল ও তার সহযোগী আলমগীরকে গ্রেপ্তারে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ফয়সালকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে আদালত। এর আগে ফয়সালের স্ত্রী বান্ধবী ও শ্যালকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের মতে ১৩তম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি সুগভীর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই শরীফ ওসমান হাদির ওপর এই হামলা চালানো হয়।