
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার শাক্তা ইউনিয়নের আটিবাজারে জুম্মার নামাজের সময় সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মান্না টাওয়ারে অবস্থিত ‘ভাই ভাই জুয়েলার্স’ নামের স্বর্ণের দোকানের দুটি তালা ভেঙে প্রায় ২৮ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় চক্রটি। লুট হওয়া স্বর্ণের বাজারমূল্য আনুমানিক ৫৬ লাখ টাকা।
দোকানের মালিক জমসের জানান, জুম্মার নামাজের সময় তিনি দোকান তালাবদ্ধ করে পাশের মসজিদে যান। তিনি বলেন,“নামাজের মধ্যে স্থানীয়রা দৌড়ে এসে জানায় দোকানে চুরি হয়েছে। মসজিদ থেকে এসে দেখি—তালা ভাঙা, শোকেস এলোমেলো, আর ৮৮টি স্বর্ণের আংটি ও ২৫টি গলার চেইন নেই। চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল।”
পাশের দোকানদার বেঙ্গল বেকারির মালিক জানান,“দুপুরে আমার দোকানের সামনে একটা মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে ছিল। আমরা ভেবেছিলাম কেউ হয়তো ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছে বা নামাজে গেছে।বুঝতেই পারিনি এত বড় চুরি পরিকল্পনা চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটেছে যে আশপাশের কেউই সন্দেহ করেননি। ঘটনার পরপরই আমি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।”
আটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হাজী হুমায়ুন কবির চুরির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন,“দিনদুপুরে স্বর্ণের দোকানে এভাবে চুরি হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং পুরো বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের বাজারে সিসিটিভি থাকলেও এটি যে সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ, তা স্পষ্ট। আমরা জরুরিভাবে আরও ক্যামেরা স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি।
ব্যবসায়ীরা এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা দ্রুত পুলিশের নিয়মিত টহল, বাড়তি নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানাচ্ছি।”
এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ডাবলু জানান,“ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় আমরা ইতোমধ্যে দোকান ও আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। চক্রটি পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের একটি বিশেষ টিম কাজ করছে।”
দিনের আলোয় বাজারের কেন্দ্রস্থলে এ ধরনের সাহসী চুরি এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বিশেষ করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, “সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় ছোট-বড় চুরির ঘটনা বাড়ছে, কিন্তু এত বড় পরিসরে এমন লুট আগে ঘটেনি। তাই আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।বাজারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নেই। পুলিশি টহলও কম। এখনই নিরাপত্তা ব্যবস্থা না বাড়ালে ভবিষ্যতে এমন চুরি আরও বাড়তে পারে।”