
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও লেখক ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) মানবতার আদর্শ শিক্ষক, পথপ্রদর্শক ও পরিপূর্ণ পর্যবেক্ষক। তাঁর শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করলে মুসলিম উম্মাহ শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হবে। পৃথিবীকে জয় করার জন্য রাসূল (সা.)-এর শিক্ষা পদ্ধতির বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা পদ্ধতি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আজহারী বলেন, রাসূল (সা.) সাহাবি ও শিশুদের পিতৃস্নেহে লালন করে শিক্ষা দিতেন। বাবা-মা যেমন আদর-যত্নে সন্তানকে শেখান, তিনি তেমনভাবেই সহজ ও সাবলীলভাবে শিক্ষা দিতেন। তিনি কখনো কঠোরতা পছন্দ করতেন না। রাসূল (সা.) বলেছেন— ‘তোমরা আমাকে কঠোরকারী বা জটিলকারী ভাবো না; আল্লাহ আমাকে সহজ শিক্ষক হিসেবে পাঠিয়েছেন।’ এজন্য তাঁর শিক্ষা মানুষকে আশাবাদী করে তুলত।
তিনি আরও বলেন, রাসূল (সা.) দ্বীনকে সহজ করার নির্দেশ দিয়েছেন— কঠিন নয়। তিনি চাইতেন মানুষ দ্বীনের সাথে নিজের জীবনকে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাঁর কথাবার্তা ছিল ধীর, পরিষ্কার ও পরিমিত; এমনকি কথার শব্দসংখ্যাও গুনে ফেলা যেত। আদর্শ শিক্ষকের সব গুণই তাঁর মধ্যে ছিল।
শিক্ষা পদ্ধতির ধরন নিয়ে আজহারী বলেন, রাসূল (সা.) দুইভাবে শিক্ষা দিতেন— প্রাইভেট ও পাবলিক। উট, খচ্চর বা গাধার পিঠে কাউকে নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত শিক্ষা দিতেন; আর খুতবা বা বড় সমাবেশে দিতেন গণশিক্ষা।
তিনি জানান, রাসূল (সা.) বেশিরভাগ সময় প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন এবং সাহাবিদের উত্তর দিতে উৎসাহ দিতেন। কখনো অ্যাসাইনমেন্ট দিতেন, আবার গুরুত্ব বোঝাতে কোনো কথা তিনবার বলতেন। বিদায় হজের ভাষণেও তিনি তিনবার সাক্ষ্য নিয়েছিলেন। হাত-পা ও আঙ্গুলের অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে তিনি বিষয়বস্তু স্পষ্ট করতেন।
ড. আজহারী বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন অসাধারণ পর্যবেক্ষক। কে কোন বিষয়ে দুর্বল, তা বুঝে একই প্রশ্নের ভিন্ন ভিন্ন উত্তর দিতেন। ভুল হলে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সংশোধন করতেন। তিনি জিবরাঈল (আ.)-কে কোরআন শোনাতেন এবং তার কাছ থেকেও শোনতেন। বিভিন্ন ভাষা শিক্ষায় উৎসাহ দিতেন— এমনকি ইহুদিদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এক সাহাবিকে হিব্রু শেখার নির্দেশও দিয়েছিলেন।