
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগে মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (এডি) মোঃ আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি এক প্রেস রিলিজে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের উত্তর রমজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার নেতৃত্বে দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গত ০২/০৭/২০২৫ ইং তারিখে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে উক্ত প্রতিষ্ঠানটিতে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে প্রাপ্ত তথ্য, সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যানুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ২০১৫ ইং সালের ১৪ এপ্রিল তারিখে ১টি জাতীয় পত্রিকা ও ১টি আঞ্চলিক পত্রিকায় কালকিনি উপজেলাধীন উত্তর রমজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন জমার সর্বশেষ তারিখ পর্যন্ত মোট ০৪ জন প্রার্থী চাকুরির জন্য আবেদন করেন। নিয়োগ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৫ সালের ১৫ই অক্টোবর তারিখে উক্ত পদে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডে নিয়োগ কমিটির সকল সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। আবেদনকারী ০৪ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। উক্ত নিয়োগে প্রথমে রেজাল্টশীটে বর্ণিত প্রার্থী মোঃ রোকনুজ্জামান, পিতা-মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, উত্তর রমজানপুর, উপজেলা- কালকিনি, মাদারীপুর ১৫ নম্বর পেয়ে ১ম হয়েছেন মর্মে সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে পুনরায় বর্ণিত চাকুরীপ্রার্থী ও ডিজির সুপারিশকৃত ও নিয়োগবোর্ড কর্তৃক নির্বাচিত উল্লেখিত ১ম স্থান অর্জনকারী রোকনুজ্জামানকে ১৫ নম্বর এর স্থলে ১০ নম্বর দিয়ে কম নম্বর পাওয়া অন্য আরেকজন প্রার্থী মোঃ শিপন খান-কে পূনরায় ১৫ নম্বর প্রদান করে ১ম হয়েছেন মর্মে সুপারিশ করেন। কিন্তু উক্ত সুপারিশপত্রে শিপন খান ১ম হয়েছেন লেখা থাকলেও সেখানে ডিজির প্রতিনিধির কোন স্বাক্ষর ছিলো না। এক্ষেত্রে উক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগবোর্ড অসাধুপায় ও অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে এবং জাল-জালিয়াতি করে ১ম হওয়া ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে কম নম্বর পাওয়া শিপন খানকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে দুদকের তদন্তে সত্যতা পেলে মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের অভিযানকালে এনফের্সমেন্ট টিম উক্ত ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী নিয়োগের সংশ্লিষ্ট মূল ফলাফল/উত্তরপত্র ২টি জব্দ করেন। সেখানে দেখা যায় মাদারীপুর সরকারী ইউনাইটেড ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ( ডিজির মনোনীত ব্যক্তি) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, উত্তর রমজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম, বর্তমান প্রধান শিক্ষক রমনীকান্ত ভক্ত ও অবৈধভাবে সুবিধা নিয়ে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ নেয়া শিপন খান এই জাল-জালিয়াতি ও দূর্ণীতির সাথে জড়িত। উল্লেখিত ও অফিস সহায়ক শিপন খান ২০১৬ ইং সালের এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে জুন/’২৫ ইং তারিখ পর্যন্ত ১১,৮০,৭৬৪/- টাকা বেতন উত্তোলন করেছেন। এসব বিষয় দূর্ণীতি, বেআইনি, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আর্থিক অনিয়ম সংশ্লিষ্ট হওয়ায় মাদারীপুর দুদকের উপ-পরিচালক (এডি) আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ১৭/১১/’২৫ তারিখে মাদারীপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং-০৫, তারিখ : ১৭/১১/’২৫ ইং।