
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যুবদলের স্থাপন করা একটি তোরণ ভেঙে পড়েছে বিআরটিসির চলন্ত যাত্রীবাহী বাসের সামনে। এতে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রী ও পথচারীরা।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কদমতলী গোলচত্বর সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভাঙা তোরণের কাঠ-বাঁশ সরিয়ে ফেললে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, চার লেন সড়কের মাঝের বিভাজক এবং বিপরীত পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তোরণটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পচা বাঁশ ও দুর্বল কাঠের ফ্রেম সড়কের ওপর ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে।
বিআরটিসির বাসযাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, “গুলিস্তানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেছিলাম। হঠাৎ বিশাল আকৃতির তোরণটি ধপ করে সড়কে পড়ে যায়। আঁতকে উঠেছিলাম— অল্পের জন্যই বেঁচে গেছি। রাজনৈতিক অজ্ঞতার কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, “কদমতলী এলাকায় যেদিকে তাকাই— রাজনৈতিক ব্যানার, পোস্টার, তোরণ! এমনকি রাস্তার মাঝের জায়গাটাও ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এগুলো এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক।”
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা জেলা দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সোনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, “তোরণ সরানোর জন্য আগেই দলীয় নেতাদের বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা শোনেননি। সম্ভবত পচা বাঁশের কারণে এটি ভেঙে পড়ে। ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় কাঠামোটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সড়কের পাশে কোনো তোরণ নির্মাণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবদলের এক স্থানীয় নেতা বলেন, “অনেকেই এখন রাজনীতি করছেন শুধু প্রচার আর ব্যানারের প্রতিযোগিতায় নামতে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ না করলে জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়বে।”
এ বিষয়ে আগানগর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন বলেন, “যেসব জায়গায় ব্যানার বা তোরণ মানুষের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করে, সেগুলো আমরা সরিয়ে নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকব।”
এদিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাহিদ বলেন, “কয়েক দিন আগেই তোরণ অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা তা মেনে নিয়েছেন। এতে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
স্থানীয়রা জানান, রাজনৈতিক তোরণ ও ব্যানার স্থাপনে প্রশাসনের কড়াকড়ি না থাকায় এমন ঝুঁকি বারবার তৈরি হচ্ছে।