ফায়েজুল শরীফ,ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশের ঐতিহ্যবাহী ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ সাংবাদিকদের সংগঠন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার শপথ ও পরিচিতি সভা গতকাল শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে- জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকার আব্দুস সালাম কনফারেন্স হলরুমে। এতে সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের মহাসচিব মোঃ আলমগীর গনির সার্বিক পরিচালনায় ও সহ-সভাপতি আবুল মজুমদারের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার বর্তমান সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের সহধর্মিণী মোছাঃ আছিয়া আক্তার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে আসন গ্রহন করেন জুলাই গনঅভ্যুত্থানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা নিহত সাংবাদিক তাহির জামানের শ্রদ্ধেয়া মাতা শহীদ সাংবাদিকের জননী সামসি আরা জামান। সকালের ১ম পর্বের অনুষ্ঠানে প্রথমে পবিত্র কুরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এরপর ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষনার মাধ্যমে ফুলের শুভেচ্ছার পাশাপাশি সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন উক্ত সংস্থার দীর্ঘদিনের পরীক্ষীত, অত্যন্ত পরিশ্রমী ও কর্মীবান্ধব মহাসচিব বিশিষ্ট সাংবাদিক মোঃ আলমগীর গনি। পরিচয় পর্ব শেষে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সকল নেতৃবৃন্দকে লিখিত শপথ বাক্য পাঠ করান উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও শহীদ সাংবাদিক তাহির জামানের শ্রদ্ধেয়া মাতা সামসি আরা জামান। শপথ বাক্য পাঠ শেষে তিনি প্রথমে উক্ত সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম আলতাফ হোসেন, জুলাই গনঅভ্যুত্থানে নিহত তার সন্তান তাহির জামান সহ অন্যান্য সাংবাদিক ও নিহত ছাত্র-জনতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। এসময় তিনি তার বক্তব্যে সকল সাংবাদিকের উদ্দশ্যে বলেন, জুলাই গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশ থেকে ফ্যাসিজম ও স্বৈরাচারীদের বিদায় হয়েছে, আমার সাংবাদিক সন্তান তাহির জামান ছিলো অত্যন্ত সৎ,মেধাবী ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক সাহসী কলমযোদ্ধা,তাকে সহ অনেক বাবা-মায়ের সন্তানকে ফ্যাসিষ্টরা হত্যা করেছে- এসব হত্যাকান্ডে জড়িতদের কেউ যেনো আইনের ফাঁক-ফোকড় দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে এবং হত্যাকারীরা যেনো সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আসে তা নিশ্চিতে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে, বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের কলম যেনো সচল থাকে। আর আপনারা দেশ ও জাতির স্বার্থে আজকে যে শপথ নিয়েছেন সে অনুযায়ী সততা,নিষ্ঠা,সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার করে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করবেন এ আশাবাদ ব্যক্তল করছি । তিনি সরকারের কাছে সাংবাদিকদের ন্যায্য পারিশ্রমিক দাবি করেন- যা’তে সাংবাদিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-পড়ে ভালো থাকতে পারেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জুলাই গনঅভ্যুত্থানে নিহত আরেক সাংবাদিক আবু তাহের মোঃ তুরাব এর আপন ভাই আবুল আহসান মোঃ আজরফ, সংস্থার ১ম মহাসচিব মোঃ আবুল হোসেন । এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ১ম পর্বের শপথ অনুষ্ঠান। এরপর বেলা ২ টায় শুরু হয় ২য় পর্বের আলোচনা সভা। বক্তব্য রাখেন সংস্থার নীতিনির্ধারক পরিষদের সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন,আলতাফ হোসেনের সন্তান মনজুর হোসেন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও নির্বাহী সভাপতি মোঃ শাহজাহান মোল্লা,ঢাকা মহানগরের সভাপতি মোহসিন হাকিম, কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি খাইরুল ইসলাম, আতিকুর রহমান আজাদ, এম,আর প্রিন্স, যুগ্ম মহাসচিব মামুন-অর-রশীদ,নাদিম,সহকারী মহাসচিব খলিলুর রহমান, সাংগঠনিক সচিব আজিজুর রহমান জয়নাল, শরীফ মোঃ ফায়েজুল কবীর, দপ্তর সচিব মোঃ রাব্বি মোলা, পরিকল্পনা সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম,কক্সাবাজার জেলার সভাপতি মোঃ ওসমান এলি সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শেষে সভার সভাপতি মোছাঃ আছিয়া আক্তার তার বক্তব্যে সবার উদ্দেশ্য বলেন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা আমার মরহুম স্বামী মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন আপনাদের সাথে নিয়ে ৪৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন, সেই থেকে এখন ৪৪ বছরে পদার্পণ করা এই সংগঠনে আপনারা আছেন, আমিও আছি এবং ভবিষ্যতে থাকবে অথচ প্রতিষ্ঠা সভাপতি আমাদের মাঝে নেই, তার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী বলতেন আমার ২ টা সন্তান নয় আমার সন্তান ৩ টি, আর তারা হলো মোঃ জামাল হোসেন, মোঃ মনজুর হোসেন ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা। কাজেই এ সংস্থায় সবাই আমার সন্তানের মতো। আপনারা এসংস্থাকে এগিয়ে নিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন এবং আপনাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ সংস্থা আপনাদের পাশে রয়েছে সততা ও নিষ্ঠার সাথে। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা হোক এ সংস্থার সকল সাংবাদিকের অঙ্গীকার। পরে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের উক্ত সংস্থার পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সভাপতি মোঃ আছিয়া আক্তার।