রাজাপুর প্রতিনিধিঃ
শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে ঝালকাঠির রাজাপুরে অনুষ্ঠিত হলো এক সম্প্রীতির সমাবেশ। ধর্ম, বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে পাশে সরিয়ে রেখে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্রিত হয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাজাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দির প্রাঙ্গণে এই সভার আয়োজন করা হয়। এফসিডিও’র অর্থায়নে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের এমআইপিএস প্রকল্পের আওতায় পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পি.এফ.জি), রাজাপুর এর উদ্যোগে সভার সভাপতিত্ব করেন শ্রীশ্রী হরিমন্দিরের সভাপতি প্রান বল্লভ সাহা।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পি.এফ.জি কো-অর্ডিনেটর ও সমাজসেবামূলক সংগঠন সাইডো এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ হোসাইন আহমেদ কামাল।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল কর্মকর, স্থানীয় মসজিদের ইমামবৃন্দ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজাপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি আল-আমীন রুমান, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ পারভেজ, গণ অধিকার পরিষদ রাজাপুর শাখার সাবেক সভাপতি আল-আমীন, শিক্ষক, সাংবাদিক, সমাজকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন এমআইপিএস প্রকল্পের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মো. রেজবিউল কবির।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব সম্প্রদায়ের মানুষের সহযোগিতা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে ঐক্যের মঞ্চে এসে সবাই অঙ্গীকার করেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না।
ইসলামী আন্দোলনের আল-আমীন রুমান বলেন, “গত বছর আমরা নিজেরা মিলে হরিমন্দির পাহারা দিয়েছি পূজার সময়। এবছরও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আপনাদের পাশে আছি। ধর্মভিত্তিক বিভাজনের কোনো সুযোগ নেই এই মাটিতে।”
সভাপতি প্রান বল্লভ সাহা বলেন, “আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই জনপদে শতকরা সাত-আট শতাংশ মাত্র। কিন্তু আপনারা মুসলমান ভাইয়েরা পাশে থাকেন বলেই আমাদের উৎসব প্রাণ ফিরে পায়। দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার উৎসব। আপনাদের সঙ্গে নিয়েই এই উৎসব পূর্ণতা পায়। পূজায় আপনাদের সকলকে অগ্রিম নিমন্ত্রণ জানাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার পরিবেশ গড়ে তুলতে এ ধরনের সভা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।