চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এক ব্যতিক্রমী জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে দামুড়হুদা উপজেলায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেছেন।
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রোজ শুক্রবার ৩ টা ৩০ মিনিটের দিকে তিনি দামুড়হুদা ডিসি ইকোপার্কে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন, নতুন জামে মসজিদের উদ্বোধন করেন এবং পরে কাপাসডাঙ্গার পূর্বপাড়ায় ভূমিহীন শিশুদের জন্য একটি নতুন শিশু পার্কের উদ্বোধন করে তাদের হাতে খেলার সামগ্রী তুলে দেন।
এই অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র এবং উপজেলা ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তা কে এইচ তাসফিকুর রহমান।
প্রকৃতি ও আধ্যাত্মিকতার মিলন ডিসি ইকোপার্কটি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র।
এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শান্ত পরিবেশ দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এই পার্কের সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে পার্কের বিশাল জলাশয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
এ সময় তিনি বলেন, “পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বৃদ্ধি করা আমাদের সবার দায়িত্ব। এই মাছের পোনাগুলো জলাশয়ের ইকোসিস্টেমকে আরও সমৃদ্ধ করবে।”
একইসাথে, তিনি পার্কের ভেতরে নির্মিত একটি নতুন জামে মসজিদের উদ্বোধন করেন। এই মসজিদটি শুধু পার্কের কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের জন্য নয়, বরং আশেপাশের এলাকার মুসল্লিদের জন্যও একটি শান্তিপূর্ণ ইবাদতের স্থান হিসেবে কাজ করবে।
ফিতা কেটে মসজিদের উদ্বোধন শেষে জেলা প্রশাসক মোনাজাতে অংশ নেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেন।
ভূমিহীন শিশুদের জন্য স্বপ্নের ঠিকানা এদিনের সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী মুহূর্তটি ছিল কাপাসডাঙ্গা পূর্বপাড়ায় ভূমিহীন শিশুদের জন্য নির্মিত শিশু পার্কের উদ্বোধন।
এই এলাকার অনেক পরিবার গৃহহীন এবং তাদের শিশুরা খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত এই পার্কটি তাদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
পার্ক উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান এবং তাদের হাতে নতুন খেলার সামগ্রী তুলে দেন।
শিশুদের হাসি-খুশি মুখ দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “একটি শিশুর হাসি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এই পার্কটি তাদের জন্য শুধু খেলার জায়গা নয়, বরং একটি স্বপ্নের ঠিকানা। আমরা চাই প্রতিটি শিশু একটি সুস্থ ও সুন্দর শৈশব পাক।”
উপস্থিত স্থানীয়রা এই উদ্যোগের জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, “আমাদের শিশুরা আগে খোলা জায়গায় খেলতে পারত না, কিন্তু এখন তাদের জন্য একটি নিজস্ব খেলার জায়গা হলো। এতে আমরা খুবই আনন্দিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র বলেন, “জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন জনমুখী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ডিসি ইকোপার্ক এবং ভূমিহীন শিশুদের জন্য নির্মিত এই পার্ক দুটি তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।আমরা সমাজের সকল স্তরের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।”
উপজেলা ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তা কে এইচ তাসফিকুর রহমান জানান, সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য বাসস্থানের পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্যও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই শিশু পার্ক তারই একটি অংশ। এই সকল উন্নয়নমূলক কার্যক্রম স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে এবং তারা আশা করছেন যে ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং সমাজের দুর্বল অংশের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক সহায়তা প্রদানও প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।