
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মাদারীপুরের মৎস্য ব্যবসার প্রধান কয়েকটি পাইকারী ও খুচরা বাজার রয়েছে। তম্মধ্যে পুরান বাজার, ইটেরপোল বাজার ও কুলপদ্দী চৌরাস্তা বাজার অন্যতম। এসব বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা সাধারণতঃ চাঁদপুর ফিশারি ঘাট, আলুবাজার ফিশারি ঘাট, মস্তফাপুর মৎস্য আড়ৎ, পটুয়াখালীর মহিপুর-আলিপুর মৎস্য আহরণ কেন্দ্র, কোটালিপাড়ার রাধাগঞ্জ মৎস্য বিপনী কেন্দ্র সহ অন্যান্য জায়গা থেকেও পাইকারী মাছ এনে মাদারীপুরের উল্লেখিত বাজারগুলোতে খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারীও বিক্রি করে থাকেন। এসব বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা যায়, তারা সাধারণতঃ রাতের বেলায় পাইকারী আড়ৎ থেকে নগদ টাকায় ঐসব মাছের চালান মাদারীপুরে বিক্রির জন্য ইঞ্জিনচালিত ভ্যানগাড়ী, টমটম, পিকআপ, এমনকি মিনিট্রাকেও নিয়ে আসেন। এছাড়া স্থানীয়ভাবেও অনেক ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরাও আশে-পাশের হাট-বাজার থেকে জেলেদের ধরা মাছ ক্রয় করে মাদারীপুর শহরের উক্ত বাজারে এনে খুচরা পর্যায়ে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের উক্ত বাজার সমূহের মৎস্য ব্যবসায়ীর সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে কোথা থেকে কিভাবে এত মাছের চালান আসে এবং কোনো সমস্যা আছে কিনা- প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাদের মধ্য থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমরা যখন রাতে মাছের চালানগুলো দূরদূরান্তের বিভিন্ন জায়গা থেকে যানবাহনে করে নিয়ে আসি তখন বেশীরভাগ রাত ৩/৪ টা অথবা ভোর রাতের দিকে আমরা ছিনতাই ও ডাকাতির কবলে পড়ি, মাছ কিনতে যাওয়া অথবা মাছের চালান আনার সময় টাকা-পয়সা সবকিছু তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে কেড়ে নেয়, মারধর করে, কথা বললে বেদম মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়, প্রতিদিনই যে এমন ঘটনা ঘটে তা-ও নয়। কোন কোন জায়গায় এসব ডাকাতি ছিনতাই হয়- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা বলেন, এসব স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো চাঁদপুর-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কের আচমত আলী খান সেতুর টোল প্লাজার আগে-পরে ও আশেপাশের ফাঁকা জায়গা, পুরান বাজারের প্রবেশ পথ সামসুন্নার গার্লস স্কুলের সম্মুখ ও আশেপাশের সড়ক, কুলপদ্দী চৌরাস্তার আগে ফাঁকা জায়গা, মস্তাফাপুর- মাদারীপুর মহাসড়কের সিদ্দিখোলা, ৯ নং ব্রীজ, চোকচারব্রীজ সহ খাগদী ও আশেপাশের এলাকায় এসব ছিনতাই-ডাকাতি হয়। তারা আক্ষেপ করে আরো বলেন, একবার ছিনতাই হলেই আমাদের সারা মাসের কামাই-রুজি শেষ হয়ে যায়, বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে থাকতে হয়, আবার নতুন করে মূলধন যোগাতে আমাদের চরম খারাপ অবস্থায় পড়তে হয়। এ ব্যাপারে যদি আমাদের নাম প্রকাশ করা হয় তবে ছিনতাইকারী-ডাকাতেরা আমাদের খুন-জখম করতে পারে, তাই দয়া করে আমাদের নাম বলবেন না বলে অনুরোধ করেন ভূক্তভোগী মৎস্য ব্যবসায়ী খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
ছিনতাইকারী-ডাকাত চক্রের হাত থেকে তাদের মূলধন-চালান রক্ষা, মারধরের হাত থেকে বাঁচা ও জানমাল-টাকা-পয়সা রক্ষার্থে ভূক্তভোগী মৎস্য ব্যবসায়ীরা আক্রান্ত কবলিত এলাকা সহ অন্যান্য এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রাতের টহল আরো জোরদারের জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।