সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকাদের জন্য একটি সরকারী প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়। যাতে উল্লেখ করা হয় প্রত্যক শিক্ষক- শিক্ষিকাকে সকাল ৯ টার মধ্যে বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু করতে হবে- এবং এলাকা ভিত্তিক এবং ক্লাস্টার অনুসারে ৪ টা থেকে ৪ টা ১৫ পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলবে। এমন নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সকল বিদ্যালয়ে নোটিশ জারী করলে তা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই তথ্য পৌছানো হয়। এসব আইন কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তব দেখা যাচ্ছে চিত্র ভিন্ন, সিরাজগঞ্জ অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিমের অনুসন্ধানে এমন একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে একটি বিদ্যালয়ের ভয়াবহ চিত্র ,সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ৫৯নং গাড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যেখানে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ইসমত আরা যিনি নিজেই মানেন না সরকারী এসব প্রজ্ঞাপন। নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন সকাল ৯ টার পরে। আজ ১৩ ই আগষ্ট বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন ৯ঃ১৮ মিনিটে এবং পতাকা উত্তোলন করেন ৯ঃ২১ মিনিটে,সহকারী শিক্ষিকা লাকী খাতুন ৯ঃ২৫ মিনিট, মোছাঃ সালমা খাতুন ৯ঃ২৭ মিনিট, মোছাঃ তানজিলা খাতুন ৯ঃ২৮ মিনিটে হাজির হন নানা অজুহাতে, কিন্তু সহকারী শিক্ষিকা লিমা খাতুন হসপিটালে যাচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষিকা ইসমত আরা-র কাছে ৯ঃ২৮ মিনিটে বিষয়টি জানান ।
তাদের এমন কর্মকান্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। তাদের ধারনা হয় তো সরকারি স্কুল গুলো এভাবেই চলে। বিদ্যালয়টি অনুসন্ধান করতে গেলে এলাকাবাসীর মধ্যে চলে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝর।
ঐ বিদ্যালয়ের পাশের এক মুদি দোকানদার বলেন,
সকল শিক্ষিকারা নিয়মিত স্কুলে আসেন না আবার আসলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আসেন না আমরা কিছু বলতে পারিনা কারন সব শিক্ষিকারা আমাদের গ্রামের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, এখানে শিক্ষিকারা তাদের মন মত আসে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেও বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু সঠিক সময়টি জানা যায়নি। কেউ বলেছে ৯ টা কেউ ৯ টা ৩০ আবার কেউ বলেছে সকাল ১০ টায়। কোচিং বিষয়ে পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থীরা বলেন,আমরা স্কুলের ম্যাডামের কাছে কোচিং করি এবং পরিক্ষার আগে সব দাগিয়ে দেয়। পরিক্ষায় যা আসে তা বলে দেয়। তারা আরও জানান,পঞ্চম শ্রেণীতে ২৮ জন শিক্ষার্থী সবাইস প্রতি মাসে ৪০০ টাকা করে দিয়ে প্রাইভেট পড়েন সকাল ৮ টা থেকে ৯টা টা পর্যন্ত লাকী ম্যাডামের কাছে,
এসকল বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকারা বলেন, হ্যাঁ অস্বীকার করবোনা আমাদের মাঝে-মধ্যে ৫-১০ মিনিট লেট হয় কিন্তু আজকে একটু বেশি লেট হয়েছে। কিন্তু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রতিদিন সকাল ৯ টায় করি।প্রাইভেট বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ লাকি খাতুন বলেন, আমি পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ৪০০ টাকা করে বেতন নিয়ে প্রাইভেট পড়াই কিন্তু কয়েক জনকে ফ্রি পড়াই।শুধু তাই না আমি কলেজর শিক্ষার্থীদেরও প্রাইভেট পড়াই।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ ইসমত আরা বিদ্যালয়ে দেরিতে আসার কথা স্বীকার করেন এবং বলেন স্কুলে ফুল গাছ লাগাবো তাই আসতে একটু লেট হয়েছে, এবং প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে-বলেন,পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৪০০ টাকা করে দিয়ে প্রাইভেট পড়েন লাকী ম্যাডামের কাছে এটা আমি জানি কিন্তু আমার স্কুলে পড়ানো হয় না,এই বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জনাব আশিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে সকাল ৯ টার মধ্যে পাঠদান শুরু করতে হবে, এখন সব সময় খোঁজখবর নিতে পারি না আর এ বিষয়টি হচ্ছে শিক্ষকদের আন্তরিকতার বিষয়, এখন আমাকে বললেন আমি তাদেরকে ভালোভাবে শাসন করব যেন ভবিষ্যতে এমন কাজ না করে, তারপরও আপনারা দেখেন প্রথমবারের মতো ক্ষমা করা যায় কি না।