1. news@dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ : দৈনিক আলোকিত নিউজ
  2. info@www.dainikalokitonews.com : দৈনিক আলোকিত নিউজ :
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে পুরোহিত ও সেবাইতদের সাতক্ষীরায় ৯ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণ চুয়াডাঙ্গার নতুন পুলিশ সুপার উপ-পুলিশ কমিশনার গৌতম কুমার বিশ্বাস মিঠাপুকুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৫ জন শিক্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফুলকুঁড়ি বিজ্ঞানচক্র বান্দরবানের বিজ্ঞানমেলা অনুষ্ঠিত মাদক সেবনকারী এবং মানব পাচারকারীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মতবিনিময় সভায় অনুজা নওগাঁয় প্রেমের বিয়ের পর স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত পার্বতীপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে ২ মাদক সেবীর সাজা গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ কাতারের পর এবার ইয়েমেনে হামলা চালালো ইসরায়েল, নিহত-৩৫ পিটার হাসের কোম্পানি’ থেকে ১ লাখ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার

অটোরিকশা চালিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস জিপিএ- ৫ পাওয়া রোমান উচ্চশিক্ষা নিয়ে হতাশ

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

ভোলাহাট প্রতিনিধিঃ

অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালানো আর বাবার চিকিৎসা খরচ জোগানোর লড়াই করতে করতে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে রোমান আলী। সংসার চালানো আর বাবার চিকিৎসা খরচ জোগানের লড়াইয়ে শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও হার মানেননি তিনি। তার এই সাফল্য এখন এলাকার গর্ব ও অনুপ্রেরণার গল্প।

রোমান চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার তাঁতীপাড়া গ্রামের মো. তোফাজ্জল হক ও রুনা বেগমের একমাত্র ছেলে। সে বজরাটেক সবজা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকল বিষয়ে গোল্ডেন এ প্লাস অর্জন করেছে।

ছোটবেলা থেকেই জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি রোমান। যখন তার বয়স মাত্র চার বছর তখন তার বাবা নিম গাছ থেকে পড়ে মারাক্তকভাবে আহত হন। ভেঙে যায় কোমর, পরবর্তীতে নষ্ট হয়ে যায় একটি কিডনি। পরিবারের উপার্জনের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলে ভর্তি হলেও তার প্রতিদিনের সময় কাটে রিকশা চালিয়ে। সকালে স্কুল আর বিকেলে উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলা।

রোমান আলী বলেন, ‘আমার বাল্যকালে বাবা শারীরিভাবে অচল হয়ে যায়। বড় হয়ে আমাকে পরিবারের হাল ধরতে হয়। পড়ালেখার সময় পড়ালেখা করি, স্কুল থেকে এসে বিকেল বেলা রিক্সা চালায়। আমি হতাস হয়ে গেছিলাম যে, আমি পড়ালেখা করতে পারবো কী না? কিন্তু আমার পড়ালেখার জন্য আমার মা বাবা, আত্নীয় স্বজন, শিক্ষকেরা অনেক সহযোগীতা করেছে। লক্ষ্য ছিল বাবাকে ওষুধের ব্যবস্থার পাশাপাশি সংসার চালানো আর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া।

পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে রোমান বলেন, পড়াশুনার খরচ চালানোর মত আমার কোনো সামর্থ্য নাই। কষ্ট করে হলেও যতদূর সম্ভব পড়ালেখা চালিয়ে যাবো। পড়ালেখা করে আমি মানুষের মত মানুষ হতে চাই।’

রোমানের চাচা মো. জহরুল হক জানান, ‘২০১৩ সালে আমার ছোট ভাই তোফাজ্জল নিম গাছের ডাল কাটতে গিয়ে পড়ে যায়। এরপর দীর্ঘ চিকিৎসা চলছে। কোনোভাবে বেঁচে আছে সে। এখন ভাতিজা রোমানই রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। সারাদিন রিকশা চালিয়ে ক্লান্ত শরীরে রাতে যতটুকু সময় পেয়েছে মন দিয়ে পড়েছে। ছোটবেলা থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছে। এত প্রতিকূলতার মাঝেও ভালো রেজাল্ট করেছে। কেউ যদি পাশে দাঁড়ায়, তাহলে ছেলেটা উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে এবং মানুষের মত মানুষ হবে।’

রোমানের মা রুনা বেগম বলেন, ‘ছেলে স্কুল থেকে ফিরে কোনো বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাইনি। সংসারের টানাপোড়েনে রাস্তায় নেমেছে রিকশা নিয়ে। রাতে ক্লান্ত শরীরেও বই খুলে পড়তে বসত।’

বাবা তোফাজ্জল হক বলেন, ‘ছেলেটা বড় কষ্ট করে এত ভালো রেজাল্ট করেছে। কিন্তু এখন কীভাবে তাকে কলেজে পড়াব, সেটাই বুঝি না। যদি কেউ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত, তবে হয়তো ছেলের ভবিষ্যৎ আলোকিত হতে পারত।’

রোমানের এই সাফল্যে এলাকাজুড়ে খুশির আমেজ থাকলেও তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ডুবে আছে। স্বহৃদয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা পেলে সে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে এমনটাই প্রত্যাশা রোমান ও তার পরিবারের।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ,কলাম,তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট