ফায়েজুল শরীফ,ষ্টাফ রিপোর্টার:
মাদারীপুর শহরের পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন বাগেরপার এলাকার বাস শ্রমিক ও পরে খুপরি-মুদি দোকানী থেকে কোটি-কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মানবপাচারকারী মাফিয়া ডন এমদাদ হাওলাদার ও তার সহযোগী শ্যালক, শহরের উপকন্ঠের লক্ষীগঞ্জ গ্রামের ত্রাস ও কিশোর গ্যাং পালনকারী সন্ত্রাসী বাদল লস্কর। এমদাদ হাওলাদার ওরফে খাটো এমদাদ মাদারীপুর-২ আসনের আওয়ামীলীগের পতিত প্রভাবশালী সাবেক এমপি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি (বর্তমানে কারা অন্তরীণ) শাজাহান খানের লালিত-পালিত আশীর্বাদপুষ্ট একজন বাস শ্রমিক হওয়ার সুবাদে এহেন অপরাধ নাই, যা এমদাদ হাওলাদার তার শ্যালক বাদল লস্করকে সাথে নিয়ে করেনি। ক’দিন আগে বাদল লস্কর এমদাদ হাওলাদারের সহযোগিতায় ও তার দলবলের লোকজন নিয়ে লক্ষীগঞ্জে প্রতিপক্ষের লোকজনের উপর উপর্যুপরি বোমা হামলা চালায় ও ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে, যা পত্র-পত্রিকার খবরেও এসেছে। অপ্রতিরোধ্যভাবে চাঁদাবাজি, মাস্তানি, কিশোরগ্যাং পালন,ইয়াবা ব্যবসা ও সেবনকারী পালন সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়ানোর পাশাপাশি লিবিয়াতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অবৈধভাবে লোক পাঠানো এসব যেনো এমদাদ হাওলাদার ও তার শ্যালক বাদল লস্কর এর ছেলের হাতের মোয়া । এক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করে দুবাইতে বসবাস করা মাদারীপুরের পাকদী এলাকার খলিফাকান্দি গ্রামের আরেক মানবপাচারকারী মাফিয়া জামাল খলিফা-কে। তাদের এই তিনজনের বিভিন্ন প্রলোভন ও পাতা ফাঁদে পা দিয়ে দু-একজন বিপুল টাকার বিনিময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লিবিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছাতে পারলেও এখনো তাদের কাছে জিম্মি রয়েছে অর্ধ শতাধিক পরিবার-যারা কিনা সহায় সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব । জিম্মি হওয়া ভূক্তভোগী ঐ পরিবারগুলো তাদের সন্তানের নির্যাতন ও মেরে ফেলার ভয়ে মুখবুজে সব সহ্য করে যাচ্ছে, আর বিনিময়ে তারা হাতিয়ে নিয়েছে, নিচ্ছে কোটি-কোটি টাকা। মাদারীপুর সদরের বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী মোঃ শামীম শেখ এর পুত্র আব্দুল খালেক শেখ বিল্টন (২২) নামে একজন যুবক ৩০ লক্ষ টাকা খুইয়ে ঐ মাফিয়া চক্রের জালে পড়ে লিবিয়াতে নিহত হয়েছে। সেটাতে যাতে মামলা না হয় এবং বিষয়টি যা’তে ধামাচাপা দেয়া যায় সেজন্য উক্ত এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের পকেটে নিয়ে অত্যন্ত গোপনে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লিবিয়ায় নিহত বিল্টন শেখের বিষয়টি আপোষ-রফা হয়েছে বলে এমন গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে এ ব্যাপারে নিহতের বাবা-মার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে এ ব্যাপারে সাংবাদিকের কাছে মুখ খুলতে নারাজ হয় ও কর্মস্থল এলাকা থেকে তাদের গ্রামের বাড়ী চলে যায় এবং গ্রামের বাড়িতে গিয়েও তাদের সাক্ষাৎকার বা খোঁজ পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে নিহত বিল্টনের দুলাভাই পাভেল ফকির এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি মুঠোফোনে তার শ্যালক আব্দুল খালেক শেখ বিল্টনের লিবিয়ায় টাকার জন্যই নির্যাতনে নিহত হবার বিষয়টি সত্য জানিয়ে স্বীকার করে বলেন, আমাদের কাছ থেকে ২৫/৩০ লক্ষ টাকা নেয়ার পরেও ওরা অন্য মাফিয়া দিয়ে ধরিয়ে দিয়ে আরো টাকা আদায়ের লিপ্সায় বিল্টন শেখকে ওরা মেরে ফেলেছে। ওদের সাথে আমাদের টাকার বিনিময়ে কোনো আপোষ হয়নি। যদি কোনো টাকা পয়সা লেনদেন হয়ে থাকে সেটা আমার শশুড় শামিম শেখ বলতে পারবে। তবে আমরা এ ব্যাপারে আমার শ্যালক বিল্টন শেখ-কে লিবিয়াতে হত্যা করার জন্য অবশ্যই আইনের আশ্রয় নেবো। কেননা এখন আর তাদের শেল্টার দেয়ার মতো মাদারীপুরে কোনো গডফাদার নেই।