
নিয়ামতপুর প্রতিনিধিঃ
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নওগাঁ, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ভোর ও রাতের দিকে হালকা কুয়াশা, শিশির এবং ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীতের অনুভূতি দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক, রিকশাচালক ও ছিন্নমূল মানুষজন।
সকালের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও বাতাসে ঠান্ডার কামড় স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামছে, যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের লক্ষণ। বিশেষ করে ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডার তীব্রতা তুলনামূলক বেশি থাকছে।
খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ শীতের কারণে দৈনন্দিন আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
অনেক শ্রমজীবী মানুষ শীতের কারণে সকালবেলা কাজে বের হতে পারছেন না। ফলে আয় কমে যাচ্ছে, যা তাদের সংসার চালানোকে আরও কঠিন করে তুলছে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
নওগাঁ সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় দেখা গেছে, ভোরে কাজের সন্ধানে বের হওয়া শ্রমিকরা আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন। অনেক এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ এখনো পর্যাপ্ত না হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
কৃষি ও জনজীবনে প্রভাব:
এই শৈত্যপ্রবাহ কৃষিক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বোরো ধানের বীজতলা, শীতকালীন সবজি ও সরিষা ক্ষেতের ওপর কুয়াশা ও ঠান্ডার প্রভাব পড়ছে। কৃষকরা বলছেন, অতিরিক্ত কুয়াশা থাকলে রোগবালাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে শীতজনিত রোগ যেমন—সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।
করণীয় ও পূর্বাভাস:
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী কয়েকদিন এই অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা খেটে খাওয়া মানুষ ও শিশু-বৃদ্ধদের জন্য দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণ, অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র চালু এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
শীতের এই সময়ে মানবিক সহায়তা ও সামাজিক উদ্যোগই পারে সবচেয়ে অসহায় মানুষগুলোর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে।