
বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি টিকটক ভিডিওকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য কলহের জেরে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যার পর মরদেহ গোপন রাখতে নিজ বাড়ির টয়লেটের হাউজে লাশ লুকিয়ে রাখার ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের নুড়ুইল মধ্যপাড়া এলাকায়। নিহত গৃহবধূ মারুফা (২৫) সদর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের নন্দীপাড়ার মাহবুব আলীর মেয়ে। তিনি নুড়ুইল মধ্যপাড়ার শাহজাহান আলীর ছেলে মুকুল মিয়ার (৩১) স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে মারুফা তার চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ওই অনুষ্ঠানে নাচ-গানের কিছু ভিডিও টিকটকে ধারণ করা হয়, যা পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ভিডিওকে কেন্দ্র করে স্বামী মুকুল মিয়ার সঙ্গে মারুফার কথা-কাটাকাটি ও ঝগড়া শুরু হয়।
এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ স্বামী মুকুল মিয়া তার স্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ গোপন করতে বাড়ির টয়লেটের হাউজে লাশ রেখে মুখ বালু, খোয়া ও সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মারুফা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছে—এমন ভুয়া তথ্য আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর কাছে ছড়িয়ে দেন মুকুল।
এমনকি ঘটনার কয়েকদিন পর, ১৫ ডিসেম্বর মুকুল মিয়া নিজেই বগুড়া সদর থানায় বাদী হয়ে স্ত্রী নিখোঁজের একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করেন, যাতে সন্দেহের তীর ভিন্ন দিকে ঘুরে যায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ ও বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যৌথভাবে ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে সন্দেহভাজন মুকুল মিয়াকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার দেওয়া তথ্যে নিজ বাড়ির টয়লেটের হাউজ থেকে মারুফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মুকুল মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।