
নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসইকরণের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্পে অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠেছে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের আওতায় একটি গ্রামীণ রাস্তা এইচবিবি করণের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির প্যাকেজ নম্বর W096DDMHBB-01।
প্রকল্পের নাম ও নকশা অনুযায়ী, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ০৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলতলী প্রাইমারি স্কুল থেকে ইউসুফের বাড়ি পর্যন্ত মোট ১০০০ মিটার রাস্তা এইচবিবি করণের কথা থাকলেও বাস্তবে কাজটি ইউসুফের বাড়ি পর্যন্ত না গিয়ে তালেবের বাড়ি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির নির্ধারিত কাজের দৈর্ঘ্য ছিল ১০০০ মিটার এবং এর বিপরীতে চুক্তি মূল্য ধরা হয় ৯৪,০৪,৯০৫.০০ টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইয়াসিন এন্ড ব্রাদার্স, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজ বাস্তবায়নের সময় নিম্নমানের দুই নম্বর ইট ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি মাটি মিশ্রিত বালি ব্যবহার এবং প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্টের পরিমাণ কম রেখে বালির পরিমাণ বেশি দেওয়া হয়েছে, যা প্রকল্পের কারিগরি মানদণ্ড লঙ্ঘন করে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, রাস্তাটি সরেজমিনে দেখলেই কাজের নিম্নমান স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। অনেক স্থানে ইট সঠিকভাবে বসানো হয়নি এবং জয়েন্ট ও বেস প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়েছে।
প্রকল্পের সাইনবোর্ডে উল্লেখিত স্থান অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন না হওয়া এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জনাব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমি এখনো কাজটি বুঝে নেইনি। বুঝে নেওয়ার সময় সবকিছু যাচাই করে বুঝে নেব।”
এদিকে কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সাদগর-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছেন এবং প্রকল্পের কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি বলে উল্লেখ করেন।
এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজের পরিমাপ যাচাই, গুণগত মান পরীক্ষা এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।