চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
গ্রাম্য জীবিকা নির্বাহকারী জনগোষ্টি গ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও চট্টগ্রাম প্রধানত তার বন্দর এবং বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য পরিচিত, এর গ্রামীণ অঞ্চলগুলি জাতীয় অর্থনীতিতে ও স্থানীয় জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চট্টগ্রামের গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা নিম্নরূপ:
কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তাঃ বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিপ্রধান এবং চট্টগ্রামের গ্রামীণ এলাকাও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানকার উর্বর জমি এবং জলবায়ু ধান, শাকসবজি, ফলমূল এবং অন্যান্য ফসলের চাষের জন্য সহায়ক। এটি স্থানীয় জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদঃ উপকূলীয় অঞ্চল এবং নদী-নালার উপস্থিতির কারণে মৎস্য চাষ চট্টগ্রামের গ্রামীণ অর্থনীতির একটি প্রধান খাত। চিংড়ি এবং অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প রপ্তানি বাণিজ্যেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এছাড়া পশুপালন, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সমাজে শূকর, মুরগি, এবং গয়াল পালন, প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ কৃষি, মৎস্য চাষ এবং স্থানীয় ক্ষুদ্র শিল্প গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে, যা বেকারত্ব কমাতে এবং জীবনযাত্রার মান বাড়াতে সরাসরি সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক সম্পদ ও পর্যটনঃ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বনজ সম্পদ পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়ক। পরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই খাত দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
রেমিট্যান্সের প্রভাবঃ চট্টগ্রাম থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বিদেশে কাজ করেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্থপ্রবাহ বাড়ায়, যা পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
শিল্পায়নের ভিত্তিঃ চট্টগ্রামের প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলো (যেমন গার্মেন্টস, রাসায়নিক সার শিল্প) মূলত শহরাঞ্চলে অবস্থিত হলেও, এর গ্রামীণ এলাকা থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং জনবল সরবরাহ করা হয়। গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন এই শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
দারিদ্র্য দূরীকরণঃ স্থানীয় উদ্যোগে গড়ে ওঠা ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রামীণ অঞ্চলে বেকারত্ব কমিয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাঃ চট্টগ্রামের গ্রামীণ অর্থনীতিতে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যেমন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহার। তবে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (রাস্তা, বিদ্যুৎ, সেচ) এবং সহজ শর্তে কৃষিঋণ প্রদানের মাধ্যমে এই অর্থনীতিকে আরও টেকসই ও সমৃদ্ধ করার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, চট্টগ্রামের গ্রামীণ অর্থনীতি শহুরে অর্থনীতির পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং এই অঞ্চলের সুষম ও টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড