
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ভারতের তৎকালীন সরকার তার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে। এ জন্য তিনি চিরকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, “ভারত সবসময় আমাদের ভালো বন্ধু। সংকটের সময় ভারত মূলত আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাই মোদী সরকারের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা চিরস্থায়ী।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর সময় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও, সরকারী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সহিংস হস্তক্ষেপ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগে আন্দোলন রূপ নেয় সরকারবিরোধী জনরোষে। তীব্র সহিংসতায় এক হাজার চারশ’র বেশি মানুষ নিহত হন এবং হাজার হাজার আহত ও পঙ্গু হন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতদের মধ্যে অনেকে শটগান ও সামরিক অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারান। প্রতিবেদন অনুসারে দমন-পীড়নের সমন্বয়ক ছিলেন শেখ হাসিনা। এ বছরের জুলাইয়ে বিবিসিতে প্রকাশিত ফাঁস হওয়া অডিওতে দেখা যায়, আন্দোলনের সময় হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্প্রতি শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। তাঁর মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একই সাজা দেওয়া হয়েছে। জয় দাবি করেছেন, বর্তমান সরকার হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেনি।
সাক্ষাৎকারে জয় আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব প্রশাসন বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের জন্য ইউএসএআইডির মাধ্যমে কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল। তার ব্যাখ্যা, এ কারণে বর্তমান সরকারের পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল।
এদিকে, মামলায় রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া চাপমুক্ত এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়েছে। তবে জয় ও তার পক্ষের বক্তব্য রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিকোণ থেকে বিতর্ক তৈরি করেছে।