আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দক্ষিণ আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপকে ঘিরে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড-কে কেন্দ্র করে গঠিত একটি মার্কিন নৌবহর এখন অবস্থান নিয়েছে ক্যারিবীয় সাগরে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এই বিশাল নৌবহরকে “মাদকবিরোধী অভিযান” চালানোর অজুহাতে মোতায়েন করেছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ আসলে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশল।
গত মাসেই ট্রাম্পের নির্দেশে স্ট্রাইক গ্রুপটি অঞ্চলটিতে পাঠানো হয়। এরপর থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদকবাহী নৌযানের ওপর ১৯টি হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী, যেখানে ৭৬ জন নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রকে তার দেশে “অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চক্রান্তে” জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন বামপন্থি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রয়েছে কলম্বিয়াও। প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো সম্প্রতি ট্রাম্পকে “দুষ্কৃতকারী ও খারাপ মানুষ” বলে মন্তব্য করার পর উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। জবাবে পেত্রো তার দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তথ্য বিনিময় বন্ধের নির্দেশ দেন।
এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে পেত্রো লিখেছেন, “মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে মানবাধিকারের লঙ্ঘন কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। ক্যারিবীয় অঞ্চলের জনগণের জীবন ও মর্যাদাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
মার্কিন নৌবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১১ নভেম্বর স্ট্রাইক গ্রুপটি ইউএস সাউদার্ন কমান্ডের দায়িত্বাধীন এলাকায় প্রবেশ করেছে। এই কমান্ড মূলত লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা তদারকি করে।
নৌবহরটিতে রয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি নাবিক, ডজনখানেক যুদ্ধবিমান, গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং সহায়ক জাহাজ। পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, এই মোতায়েনের ফলে “আঞ্চলিক নজরদারি ও প্রতিরোধ সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে” এবং মাদক পাচার ও অপরাধী নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণে আসবে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, “আমরা ভেনেজুয়েলা সরকারকে উৎখাত করতে বা যুদ্ধ শুরু করতে চাই না।” তবে তিনি একই সঙ্গে বলেন, “আমাদের প্রতিটি হামলা ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু রোধ করছে।”
ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নে ট্রাম্প কোনো স্পষ্ট জবাব দেননি। তিনি শুধু বলেন, “আমি এখনই বলব না, আমি কী করতে যাচ্ছি বা কী করব না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক অবস্থান লাতিন আমেরিকায় নতুন শীতল যুদ্ধ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, বরং পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলের ভূরাজনীতি নতুন করে জটিল হয়ে উঠতে পারে।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড