আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেও মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর বাধার মুখে পড়ছে ত্রাণ সংস্থাগুলো। এর ফলে সেখানে ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে, আর ক্ষুধা ও দুর্ভোগে দিন কাটছে লাখো ফিলিস্তিনির।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, সীমান্তে আরোপিত কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও সীমিত প্রবেশাধিকারের কারণে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে তাদের মানবিক সংস্থাগুলো, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প।
বুধবার (৫ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর কিছুটা ত্রাণ প্রবেশ বেড়েছে বটে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের আরোপিত বিধিনিষেধ না কমালে গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।
ডব্লিউএফপির মুখপাত্র আবির ইতেফা বলেন, “আমাদের পূর্ণ প্রবেশাধিকার জরুরি। সীমিত সীমান্ত দিয়ে এত বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে ত্রাণ পৌঁছানো অসম্ভব। আমরা এখন সময়ের সঙ্গে লড়ছি—শীত এগিয়ে আসছে, অথচ মানুষ এখনো ক্ষুধার্ত।”
সংস্থাটি জানায়, গাজার ৪৪টি স্থানে তারা খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তর গাজায় পৌঁছানো এখনো সবচেয়ে কঠিন কাজ। আগস্ট মাসেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি শনাক্ত করেছিল।
ইতেফা আরও জানান, “উত্তর দিকের প্রবেশপথ বন্ধ থাকায় ত্রাণ কাফেলাগুলোকে দক্ষিণের দীর্ঘ ও ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় ঘুরে যেতে হয়। কার্যকর ত্রাণ বিতরণের জন্য সব সীমান্ত পয়েন্ট, বিশেষ করে উত্তর দিকেরগুলো, অবিলম্বে খুলে দেওয়া প্রয়োজন।”
এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধবিরতির পর ‘ইয়েলো লাইন’ এলাকা থেকে সরে দাঁড়ালে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। কিন্তু ফিরে গিয়ে তারা দেখতে পেয়েছেন, অধিকাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত। অনেকেই এখন তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
গাজার সরকারি তথ্যমতে, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মাত্র ৩ হাজার ২০৩টি ত্রাণ ও বাণিজ্যিক ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে—গড়ে দিনে প্রায় ১৪৫টি। অথচ যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী দৈনিক অন্তত ৬০০টি ট্রাক প্রবেশের কথা ছিল।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা পুরোপুরি থামেনি। মঙ্গলবার গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার হামলায় একজন নিহত ও একজন আহত হন। উত্তর গাজার জাবালিয়ায়ও গুলিতে একজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪০ জন নিহত এবং ৬০৭ জন আহত হয়েছেন।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড