
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি রেলওয়ে কোয়ার্টার থেকে আলমা খাতুন (৫০) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টায় শহরের মুন্সিপাড়া শহীদ মোস্তফা লেনের দর্জিপট্টি এলাকার কোয়ার্টার থেকে ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহরের উল্লিখিত এলাকায় রেলওয়ে কোয়ার্টারে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন জাহিদুল ইসলাম। পেশায় তিনি একজন ঝাঁল মুড়ি বিক্রেতা। তার তিন পুত্র ও এক কন্যা কর্মের তাগিদে থাকেন ঢাকা ও চট্টগ্রামে। কয়েকদিন আগে জাহিদুলের স্ত্রী রোকসানা পুত্র দুলালের চট্টগ্রামের বাসায় বেড়াতে যান। গত শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তিনি ওই নারীকে তাঁর কোয়ার্টারে নিয়ে আসেন। পরদিন রবিবার ওই কোয়ার্টারে জাহিদুল তাঁর রুমে তালা মেরে বাড়ী থেকে বের হয়ে যান। ফলে গত দুইদিন ধরে ওই রুমে তালা ঝুলতে দেখায় লোকজন ধারণা করছিল জাহিদুল পুত্র দুলালের কাছে চট্টগ্রামে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঝালমুড়ি বিক্রেতা জাহিদুলের ছেলে মো. দুলাল ওই কোয়ার্টারের একটি রুমে থাকা স্বামী পরিত্যক্তা দিনমজুর সেলিনা বেগমকে ফোন করে বলেন তাঁদের কোয়ার্টারের পিতার রুমে এক নারী মৃত অবস্থায় রয়েছে। তাঁকে দাফনের ব্যবস্থা করেন। এ কথা বলেই দুলাল মোবাইল ফোনের কল কেটে দেন। পরে সেলিনা বেগমের বিষয়টি আশেপাশের লোকজনকে জানান। এলাকাবাসী সাথে সাথে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করেন। খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন ও পুলিশ পরিদর্শক নয়ন কুমারসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে কোয়ার্টারটি তাদের হেফাজতে নেন। এরপর রংপুরের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)’র ক্রাইম সিনের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। বিকেলে তারা এসে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের পর সিআইডি ও সৈয়দপুর থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশটি থানায় নিয়ে আসেন।
এদিকে ওই সময় থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন ওই নারীর পরিচয় উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেন। এক পর্যায়ে পাওয়া যায় ওই নারীর জাতীয় পরিচয় পত্র। এতে দেখা যায়, সৈয়দপুর শহরের জোড়াপুকুর মুন্সিপাড়া এলাকায় তার বসবাস। খোঁজ মেলে তাঁর আত্মীয়স্বজনের। তারা বলেন,আলমা খাতুনের বাড়ী ফরিদপুর জেলা সদরের নিশান গোপালপুর এলাকায়। তিনি গত ১৫ বছর ধরে সৈয়দপুরে অবস্থান করছিলেন। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার (১৩ আগস্ট) নীলফামারীর মর্গে পাঠানো হবে। তাঁর আত্মীয়স্বজন ফরিদপুর থেকে রওয়ানা দিয়েছেন। এছাড়াও কোয়ার্টারের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলামকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related