আব্দুল হালিম,বিশেষ প্রতিবেদকঃ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় কৃষিকাজে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েই চলেছে। পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কৃষিক্ষেতে শ্রম দিচ্ছেন নারীরা। তবে এখনও মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,মিঠাপুকুর উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের নারী শ্রমিক কৃষিজমিতে আগের তুলনায় নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি উৎপাদনে জমিতে ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে আগাছা বাছাই, সার দেওয়া, ধান কাটা ও মাড়াইসহ নানা কাজে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান অবদান রাখছেন। তবে নারী শ্রমিকদের দাবি, এখনও তারা পারিশ্রমিক নির্ধারণে বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন।
৬ জুলাই বুধবার বিকালে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নস্থ উত্তর বঙ্গের শ্রেষ্ট, বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন ৭ জন নারী শ্রমিক আমন ধানের চারা রোপন করার সময় ছবিটি ক্যামেরা বন্ধিকরি এ প্রতিবেদক আব্দুল হালিম।
সুমি তিগ্যার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, তার দুটি সন্তান একজন কন্যাসন্তান। তাঁর স্বামী অনেক আগে মারা গেছেন সেও শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু তার অবত্যমানে সংসারে টানা পোড়া ছেলে মেয়ের পড়া লেখার খরচ যোগাতে মাঠে কাম কৃষানি করি, আরেক জন লক্ষ্মী তিগ্যা তিনি বলেন আমি আগে থেকেই কম বেশি মাঠে কাজ করতাম স্বামী অসুস্থতার কারনে শুরু হয় আমাদের সংসারে চরম অভাব-অনটন। এ পর্যায়ে তিনি পাড়ার নারীদের সঙ্গে মাঠে কাজ করতে নেমে পড়েন। প্রথমদিকে একটু লজ্জা-দ্বিধায় থাকতেন পরে পেটের দায়ে নিয়মিত কাজে বেরিয়ে পড়েন। তবে পুরুষের তুলনায় তাদের বেতন অনেক কম। পুরুষরা যতক্ষণ কাজ করেন, তারাও একই সময় কাজ করে অনেক কম বেতন পান বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
অপর নারী শ্রমিক সুফিয়া বেগম জানান, তারা ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে নিজেদের সংসারের রান্নাসহ অন্যান্য কাজ করে পুরুষদের সঙ্গেই কাজে চলে আসেন। ক্ষেতের কাজও সমানতালে পুরুষের সঙ্গে করে থাকেন। কিন্তু তারা ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা হাজিরা পান। অথচ পুরুষরা সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পেয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘স্বীকার করছি যে, পুরুষদের মতো সব কাজই আমরা করতে পারি না। যেমন– জমিতে কীটনাশন ছিটানো, মাথায় করে বোঝা বহন ইত্যাদি। কিন্তু তাই বলে এত বৈষম্য! পুরুষ শ্রমিক ৬০০ টাকা পেলে আমাদের ৫০০ টাকা দিক, তাই বলে ৩০০-সাড়ে ৩০০।’ এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানান তিনি।
একই এলাকার কৃষক বিশ্বনাথ টপ্য জানান, নারীরা কৃষিক্ষেতের নানান কাজে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলেই এখনও কৃষিকাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে। তা না হলে কৃষিক্ষেতে শ্রমিক পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ত। শ্রমিক সংকটে বাধ্য হয়ে অনেককেই কৃষিকাজ বাদ দিতে হতো। তবে নারীরা তো শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে থাকেন। কাজও পুরুষের তুলনায় কিছুটা কমই করতে পারেন। তাই বেতনও কম পান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন জানান, আদিকাল থেকেই কৃষিতে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। অতীতে নারীরা সরাসরি কৃষিক্ষেতে কাজ না করলেও ফসল কেটে বাড়ি আনার পর প্রায় পুরো কাজ নারীরাই শেষ করতেন। তবে এখন পুরুষের সঙ্গে সমানতালে নারীরা কৃষিক্ষেতের সকল কাজ করে যাচ্ছেন– এটি সুখবর। বর্তমানে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। এটিকে আরও বাড়িয়ে নিতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয় বলে তিনি জানান।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড