আতাউর শাহ্,নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় অপহরণ করে হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ড অপর এক ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অপহরণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মিশু (১৯) এবং পিংকি (৩০) এছাড়ও এ মামলায় দশ বছরের অটোকাদেশ প্রাপ্ত আসামীরা হলেন হুজাইফা এবং সাজু আহমেদ।
ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মোরশেদ (৩৫) এবং রবিউল (৩৮)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পিংকি মোবাইলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের নাজমুল (১৪) নামের এক স্কুল ছাত্রকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এরপর ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর বিকাল সাড়ে পাঁচটায় পিংকি নাজমুলকে দেখা করার কথা বলে কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারিকেল বাড়ি রোডে ডেকে নেয়। সেখান থেকে আবার পিংকি নাজমুলকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার কেসের মোড় রেল লাইনে ডেকে নেয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর সকাল দশটায় তারা সকলে মৃত নাজমুলের নিকটে থাকা মোবাইল ফোন হতে নাজমুলের পিতার মোবাইলে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে উক্ত স্থানে আসামিরা নাজমুলকে খুন করে। মৃত নাজমুলের লাশ গোপন করার জন্য আসামি মিশু বাড়ি থেকে সাদা রংয়ের প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে এসে অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় নাজমুলের মৃত দেহটি বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের উত্তর পাশে ডোবার মধ্যে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় নিহত নাজমুলের পিতা বদলগাছী থানায় একই গ্রামের মিশু (১৯), পিংকি (৩০) ও শিশু হুজাইফা (১৪) ও সাজু আহম্মেদর(১৪) নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের নামে মামালা দায়ের করে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মিশু ও পিংকিকে মৃত্যুদণ্ড এবং হুজাইফা ও সাজু আহমেদকে দশ বছরের আটকাদেশ প্রদান করেন আদালত।
অপর দিকে, গত ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন মোরশেদ ও রবিউল নামের দুই যুবক। এরপর ওই মেয়েকে রবিউল বিয়ে না করলে মেয়ের পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ের পরে রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও এবং অশ্লীল ছবি পাঠায়। ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি দেখে ওই মেয়ের স্বামী তাকে তালাক দেন। পরবর্তীতে মেয়ের পরিবার রবিউলকে বিয়ে করতে বললে রবিউল বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান। কিছুদিন পরে ঢাকার বিক্রমপুরে ওই মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হলে রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও ধর্ষণের ভিডিও এবং অশ্লীল ছবি পাঠান। তখন তার দ্বিতীয় স্বামী আইনি পরামর্শের কথা বলে ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলে মান্দা থানা পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা থাকার রিপোর্ট প্রদান করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত মোরশেদ এবং রবিউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
উভয় মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর বিশেষ কুশলি এডভোকেট রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড