ক্রাইম রিপোর্টারঃ
বিভিন্ন চাকরির প্রিলি পরীক্ষা দিয়েই যাচ্ছিলেন কিন্তু কোনো প্রিলিই পাশ করতে পারছিলেন না। একটি নয় দুটি নয় একের পর এক ৩৬টি চাকরির পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। কিন্তু হার মেনে নেননি, দমেও যাননি। তার কাছে NO মানে Next Opportunity।
তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে অবশ্যই পারবেন, অবশ্যই সফল হবেন। অবশেষে ৩৭ নম্বর চাকরির পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো প্রিলি পাশ করেন। এরপর থেকে মোটামুটি সব প্রিলি পরীক্ষায় পাশ করতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পাশ করেন। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডার তালিকায় জায়গা পান। কিন্তু দু:খ তখনো রয়ে গিয়েছিল কারণ ক্যাডার হতে পারেননি।
চেষ্টা অব্যাহত থাকে, ৪১তম বিসিএস শেষ বিসিএস। অবশেষে ৪১তম বিসিএসে বন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হোন। হ্যাঁ, ৪১তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত পিংকি রানী মজুমদারের গল্প বলছি।
পিংকি রানী মজুমদার ৪১তম বিসিএসে (বন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার বাবা দুলাল চন্দ্র মজুমদার, যিনি দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন। মা মমতা রানী মজুমদার একজন গৃহিণী।
পিংকি রানী মজুমদার কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার শাকপুর ইউনিয়নের জাগুরিয়া (ধলিরপাড়) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠা বরুড়া পৌরসভার অফিসপাড়ায়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে।
পিংকি রানী মজুমদার শৈশব ছিলেন দুরন্ত। পড়াশোনায় অমনোযোগী ছিলেন। দুষ্টুমি আর খেলাধুলা নিয়ে কেটে যেত সারা বেলা। দুষ্টুমির কারণে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় পড়াশোনার জন্য। সেখানে শাসন বারণের মাঝেও ছিল পড়াশোনা, দুষ্টুমি, দুরন্ত শৈশব।
নিজ উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি পাশ করেন। অতঃপর বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান থেকে ২০১৫ সালে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় স্থান এবং ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পড়াশোনা শেষ করেন।
২০১৬ সালে জুলাই মাসে মাস্টার্স শেষ করেন। যেহেতু ডিপার্টমেন্টে পজিশন ছিলেন তাই ভেবেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন।