জাকীরুল ইসলাম সবুজ, ষ্টাফ রিপোর্টার:
পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং এমনকি বনবিভাগের নার্সারিতেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত আকাশমনি ও ইউক্লিপটাস গাছের চারা। পরিবেশবিদদের দীর্ঘদিনের আপত্তি ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এসব গাছের চারা ক্রয়-বিক্রয় চলছে নির্বিঘ্নে।
সদর উপজেলা থেকে শুরু করে বোদা, দেবীগঞ্জ, তেতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলায় ছোট-বড় বিভিন্ন নার্সারি ও বাজারে এই গাছের চারা প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, এই গাছ দ্রুত বাড়ে, কাঠের চাহিদাও বেশি। তাই চাষিরা আগ্রহী।
দেবীগঞ্জ উপজেলার একটি নার্সারিতে কথা হলে জানা যায়, চারা বিক্রেতারা আকাশমনি ও ইউক্লিপটাসকে ‘বাণিজ্যিক কাঠ’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন, যদিও এই গাছ দুইটি মাটির উর্বরতা হ্রাস এবং জলাধার শুকিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী বলে পরিবেশবিদদের মত।
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠনগুলো বলছে, এই দুটি গাছের গভীর মূলমূলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়, এবং এসব গাছের নিচে অন্য গাছ বা শস্য জন্মাতে পারে না। ফলে জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় একাধিকবার এই দুটি গাছ রোপণ না করার আহ্বান জানালেও স্থানীয় পর্যায়ে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সরকারি বনবিভাগের নার্সারিতেও এসব গাছের চারা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বনবিভাগের নার্সারিতেও এসব গাছের চারা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে ছবি- রংপুর নিউজ।
তবে এবিষয়ে পরিবেশ সচেতন নাগরিকরা সরকারের কাছে দ্রুত নজরদারি ও বিক্রি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
পঞ্চগড় জেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা (এসএফএনটিসি) হরিপদ দেবনাথ বলেন, “এটি সরকারি ভাবে পূর্বে নিষিদ্ধ হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো দাপ্তরিক চিঠি এখনো আমাদের হাতে পৌঁছেনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যে বাগানগুলোতে পূর্বে চারা রোপণ করেছি, সেসব বাগানে ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলোর জায়গায় নতুন করে চারা রোপণের জন্য চারা সরবরাহ করছি। তবে নতুন কোনো বাগানের জন্য বর্তমানে আমরা কোনো চারা বিক্রি করছি না।”
চারা উৎপাদনের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা যে চারাগাছগুলো উৎপাদন করেছি, সেগুলো সম্পর্কে এখনো কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা পাইনি। তাই সেগুলো আমরা বিক্রি করছি।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, “আমরা ইতোমধ্যে বনবিভাগকে অবহিত করেছি এবং জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর করেছি। বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা নুরুন্নাহার মহোদয়কেও আমরা জানিয়েছি যে নিষিদ্ধ গাছের চারা উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে আমরা কীভাবে তাদের সহযোগিতা করতে পারি।
উনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি উনারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের অবহিত করবেন। মূলত, তারা আমাদের জানাবেন কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে—মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হবে, নাকি অন্য কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তবে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদেরকে তারা কিছু জানায়নি।”
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড