লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এক জমি সংক্রান্ত মামলায় আইনি লড়াই চালিয়ে অবশেষে লালমনিরহাটের মোঃ আইনুল হক ন্যায়বিচার লাভ করেছেন। ২০২৫ সালের ১৯ মে জেলা জজ আদালত আপিল খারিজ করে তার পক্ষে চূড়ান্ত রায় প্রদান করে।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২২ মে ) বিকেলে আইনুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি ও জমি দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইনুল হক জানান, তার মালিকানাধীন জমির মূল মালিক ছিলেন ত্রৈলক্ষনাথ ভট্টাচার্য ও কাশীমোহন ভট্টাচার্য। ১৯৫৫ সালে ত্রৈলক্ষনাথের স্ত্রী কুসুম কুমারী দেব্যা ২ একর জমি পাট্টা দলিলের মাধ্যমে ফোরকান উল্লাহর নামে হস্তান্তর করেন। দাগ নম্বর ৪১৮৭-এর মধ্যে থাকা পারিবারিক শিবমন্দিরের ৪ শতক বাদে অবশিষ্ট ২৪ শতক জমি ফোরকান উল্লাহ ভোগদখল করেন। ১৯৭৪ সালে উক্ত জমি দলিল মূলে ফজলুল হক ও আইনুল হক মালিকানা অর্জন করেন।
২০০৮ সালে রনজিৎ মোহন্ত, কালীপদ সেন ও পুতুল সেন নামের তিন ব্যক্তি জমিটির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালীন সময়ে কাকিনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান শহিদুল হক শহিদ এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহির তাহু পূজার অজুহাতে সাময়িকভাবে ২-৩ শতক জমি ব্যবহারের অনুরোধ করেন। লিখিত চুক্তি অনুযায়ী পূজা শেষে জমি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও, তারা জমি দখল করে সেখানে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২২ সালে আদালত মূল মামলায় আইনুল হকের পক্ষে রায় দেন। তবে প্রতিপক্ষ আপিল করলে আপিল শুনানির সময়ও তারা আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ অব্যাহত রাখে। এমনকি ১৪৪ ধারা জারি থাকা অবস্থায়ও এসব কার্যকলাপ চলতে থাকে।
অবশেষে, ২০২৫ সালের ১৯ মে আপিল মামলাতেও আদালত প্রতিপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন, যা দীর্ঘদিনের নিরবিচার ও হয়রানির অবসান ঘটায়।
সংবাদ সম্মেলনে আইনুল হক বলেন,
“১৬ বছর ধরে আমি চরম হয়রানি, মানসিক চাপ ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। মামলার ব্যয়, নিরাপত্তাহীনতা ও সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখন আমি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”