হামিদুল হকঃ
ঐতিহ্যবাহী গর্জনিয়া বাজারে গরুর হাট বন্ধ করে দেওয়ায় ঈদুল আজহার আগে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভে ফুঁসছে রামু ও আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিয়ানমার থেকে অবৈধ গরু আসার অভিযোগ তুলে হাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় খামারি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কোরবানির গরু কিনতে আগ্রহী ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
রামু উপজেলার অন্তর্গত গর্জনিয়া বাজার কেবল গর্জনিয়া নয়, পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি, দোছড়ি, বাইশারী, কচ্ছপিয়া ও কাওয়ারখোপ ইউনিয়নের জন্যও একটি নির্ভরযোগ্য বানিজ্যিক কেন্দ্র। প্রতিবছর এই বাজারে শত শত কোটি টাকার লেনদেন হয়। চলতি ২০২৫ অর্থবছরে বাজারটির ইজারা ডাক উঠেছে প্রায় ২৬ কোটি টাকা। কিন্তু স্থানীয় নুরুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তির পূর্বের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বর্তমানে বাজারটি খাস কালেকশনে রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার থেকে আসা কিছু গরুর অজুহাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গরুর হাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার খামারিরা ও সাধারণ মানুষ। তাদের বক্তব্য সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের দায়িত্ব, বাজার বন্ধ করা নয়।
“আমরা সারা বছর গরু পালন করি এই আশায় যে, কোরবানির ঈদে বিক্রি করে পরিবার চালাবো। এখন বাজার বন্ধ, বিক্রি করবো কোথায়?”—বলছেন বাইশারী এলাকার এক খামারি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য মতে, চোরাকারবারী রোধে হাট বন্ধ না করে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারি বাড়ানো উচিত ছিলো। জনগণের দাবি, সীমান্ত দিয়ে যাতে অবৈধ গরু প্রবেশ না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে, তবে গরুর হাট বন্ধ করে দিয়ে হাজারো মানুষের জীবিকা বন্ধ করে দেওয়া কোনভাবেই যৌক্তিক নয়।
একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা বলেন,“প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত শুধু জনবিরোধী নয়, এটি খামারিদের প্রতি চরম অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। ঈদের আগে গরুর বাজার বন্ধ করা ধর্মীয় ও অর্থনৈতিকভাবে একটি অমানবিক পদক্ষেপ।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষিজীবীরা মনে করেন, কোরবানির গরুর বড় বাজার গর্জনিয়াকে বন্ধ রাখলে ঈদের বাজার মার খাবে, খামারিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বে এবং সাধারণ মানুষ কোরবানির গরু কিনতে চরম ভোগান্তির শিকার হবেন।
তাদের দাবি:
১. অবিলম্বে গরুর বাজার খুলে দিতে হবে।
২. সীমান্তে বিজিবির দায়িত্বপালন নিশ্চিত করতে হবে।
৩. খাস কালেকশনের অজুহাতে বাজার ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থা বন্ধ করতে হবে।
৪. ঈদের আগে অন্ততপক্ষে গরুর হাট চলমান রাখতে হবে যেন সাধারণ মানুষ কোরবানির গরু কিনতে পারে এবং খামারিরা বিক্রির সুযোগ পায়।
এদিকে গর্জনিয়া বাজারের আশপাশে এখন থমথমে পরিস্থিতি। যেখানে এই সময়ে বাজারে গরু, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ভিড় থাকার কথা ছিল, সেখানে এখন সুনসান নীরবতা। সাধারণ মানুষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যেপ্রশাসন অবিলম্বে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে এবং জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড