নিজস্ব প্রতিনিধি:
মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামবে সরকার। এই অভিযান পরিচালনার জন্য সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
কমিটির প্রধান থাকবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব:)। সেনা-বিমান-নৌ বাহীনিসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহীনির অংশগ্রহণ থাকবে এই অভিযানে। অভিযানের করনীয় নির্ধারণ করতে মাদকের অন্যতম প্রবেশপথ কক্সবাজারে আগামি ১২মে এক বৈঠকের সম্ভব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব:)। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির এই বৈঠকে অংশ নেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) আব্দুল হাফিজ, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি, পররাষ্ট্র সচিব মো: জসীম উদ্দিন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এছাড়াও স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহাপরিদর্শক, মহাপরিচালক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), সামরিক গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর, চট্রগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার, কক্সবাজার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে কক্সবাজার এবং এর আশেপাশের জেলা গুলোতে সংঘটিত অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ। এই অপরাধ কর্মকান্ডের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসে মাদক ব্যবসা এবং চোরা চালান।
এটি বন্ধ করতে পারলে সংঘটিত অপরাধ কর্মকান্ড কমে আসবে বলে বৈঠকে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা একমত পোষণ করেন। এরপর মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় চলছে জমজমাট মাদক ব্যবসা। গত সাত মাসে ৩১টি মাদক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৫ জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে আইস-ক্রিস্টাল মেথ, ইয়াবাসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে ইয়াবার সংখ্যাই ৭০ হাজার পিস। বাংলাদেশি দুষ্টচক্র ও চোরাচালানিদের সঙ্গে সংযোগের মাধ্যমে এসব অপরাধকাণ্ড ঘটাচ্ছে রোহিঙ্গা অপরাধীরা।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় অবস্থিত ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গত ৪ বছরের বিভিন্ন সময়ে আটটি গ্রুপের মধ্যে সংঘটিত এসব ঘটনায় অন্তত ২০২ জন খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। সবশেষ ৮ মার্চ উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন।
ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়া উপজেলার বালুখালী ৮-ইস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সশস্ত্র সংগঠন আরসা ও আরএসও সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ওই রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ রফিক (৩৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে গেছে। ইয়াবা চোরাচালন এবং অবৈধ অস্ত্রই রোহিঙ্গাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের মূল কারণ। যেহেতু ক্যাম্প থেকে পাঁচ কিলোমিটার ওপারেই যুদ্ধ হচ্ছে, তাই সহজেই অনুমেয় অস্ত্র কোথা থেকে আসছে।
এছাড়া বাংলাদেশ থেকেই অস্ত্র সংগ্রহ করছে। মহেশখালীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানেও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশি দুষ্টচক্র ও চোরাচালানিদের সঙ্গে রোহিঙ্গা অপরাধীদের একটি সংযোগ আছে।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড