প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১৩, ২০২৫, ১:১৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ২৬, ২০২৫, ৬:১৯ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারে প্রধান শিক্ষকের আর্থিক অনিয়ম ধামাচাপা দিতে এডহক সভাপতির বিরুদ্ধে সাজানো মামলা
সৈয়দ কামরুজ্জামান, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার সদরের নাজিরাবাদ ইউনিয়নস্থিত আটঘর উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের আর্থিক অনিয়ম ধামাচাপা দিতে মামলা করা হয়েছে বিদ্যালয়ের এডহক ম্যানেজিং সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিভাবকদের পক্ষে ৪ জন বাদী হয়ে মামলাটি (নং- ৭২/২০২৫ইং (স্বত্ত্ব) দায়ের করেছেন মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে। এডহক সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগপূর্বক, তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সভাপতি নিয়োগের দাবীতে দায়েরী এ মামলাটিতে এডহক সভাপতি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, সিলেট এর চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় পরিদর্শক, জেলা শিক্ষা অফিসার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ ৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
জানা গেছে- মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, সিলেট গত ২৪ ফেব্রুয়ারী মোঃ মুজিবুর রহমানকে সভাপতি করে এডহক ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন দেয়। কিন্তু, পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারী মোঃ মুজিবুর রহমানকে বাদ দিয়ে শাবিপ্রবির সিনিয়র ক্যাটালগার ও বিদ্যালয় এলাকার নাগরিক মোঃ হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি করে নতুন এডহক ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন দেয়। হুমায়ুন কবির স্থানীয় অনেকের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। এর কিছুদিন পর তিনি মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের অন্তর্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ ও কারণ দর্শানোর নোটিশ পান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে- প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়, স্বেচ্ছাচারিতা, লাম্পট্য ও বিভিন্ন অনিয়মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের কিছুদিন পর স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের ভ্রাতৃকন্যাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে শ্বশুরগোষ্ঠির আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলছে তার অনিয়ম-দূর্ণীতি-স্বেচ্ছাচারিতা। তার কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় এক শিক্ষিকাকে তিনি চাকুরীচ্যুত করেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবাদী গুরুতর মামলার কারণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু, রহস্যজনকভাবে তা আলোর মুখ দেখেনি। তিনি বিদ্যালয়ের কমবেশী ৯৬ লাখ টাকার হিসাব দিচ্ছেন না। সম্প্রতি শ্বশুরগোষ্ঠিকে নিয়ে বিদ্যালয়ে মাটি ভরাট শুরু করলে স্থানীয়রা আপত্তি করায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ইউপি মেম্বার উভয়পক্ষকে শান্ত করলেও, বিষয়টি এখনও মিমাংসা হয়নি। এককথায়- তিনি শ্বশুরগোষ্ঠির আশ্রয় প্রশ্রয়ে বিদ্যালয়টিকে তার পৈত্রিক সম্পত্তির মতো ভোগ-ব্যবহার করে আসছেন।
তিনিই শ্বশুরগোষ্ঠির সহায়তায় প্রথমে ১৫ জনের স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর নতুন সভাপতিকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সভাপতি নিয়োগের আবেদন করান। পরবর্তীতে শ্বশুরগোষ্ঠির লুৎফা বেগমসহ ৪ জনকে বাদী করে এডহক সভাপতির বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করান।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ওয়াকিবহাল ২০ জনের সাথে এ প্রতিনিধির কথা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন বলেছেন- সভাপতি নিয়োগকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিভাজন-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় আমরা অন্য কাউকে সভাপতি নিয়োগের জন্য শিক্ষাবোর্ডে অঅবেদন করেছি। বাকী ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনই এসব ঝামেলার জন্য প্রধান শিক্ষককে দায়ী করেন এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতাও নিশ্চিত করেন।
মোঃ মুজিবুর রহমান বলেছেন- শিক্ষাবোর্ডের আচরণে আমি অত্যন্ত লজ্জিত হয়েছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আমি শুনিনি এবং জানিনা।
এডহক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেছেন- প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের বিগত ৭ বছরের আর্থিক হিসাব প্রস্তুত করার এবং সার্বজনীন সভা আহবান করার অনুরোধ করার পর থেকে তিনি আর আমার ডাকে সাড়া দেন না। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টায় থাকাবস্থায় আদালতের নোটিশ পাই।
প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহিন মিয়া বক্তব্য দেয়া শুরু করে ফোন কেটে দেন। লুৎফা বেগম ছাড়া মামলার অপর ৩ বাদী মামলা সম্পর্কে জানেন না। প্রধান শিক্ষক তাদের শিক্ষার্থীদেরকে উপবৃত্তি দেয়ার কথা বলে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও কাগজে তাদের স্বাক্ষর নিয়েছেন।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত